পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ হয় একটি আধ-পাগলা মানুষের কাছে, যার কথাবার্তা চালচলন আরও বেশী দুর্বোধ্য মনে হয় নীলার। কোনদিন রাত্রে সংসারের সমস্ত কাজ শেষ হওয়ার পর ছুটি পাইয়া ঘরে আসিবামাত্ৰ অনাদি দরজায় খিল তুলিয়া দেয়, হাত ধরিয়া উৰ্দ্ধশ্বাসে কি যে সে বলিতে আরম্ভ করে নীলা ভাল বুঝিতেই পারে না। কেবল বুঝিতে পারে, আবেগে উত্তেজনায় অনাদি থর থর করিয়া কঁাপিতেছে, চোখের দৃষ্টি তার উদভ্ৰান্ত। মনে হয়, নীলার আসিতে আর একটু দেরী হইলে সে বুঝি বুক ফাটিয়া মবিয়াই যাইত। কোনদিন ঘরে আসিয়া দেখিতে পায় অনাদির মুখে গভীর বিষাদের ছাপ, স্তিমিত চোখে দৃষ্টি আছে কিনা সন্দেহ। ঘুম আসে নাই, রাত্ৰি শেষ হইয়া আসিলেও ঘুম যে আজ তার আসিবেন, নীলা তা জানে, কিন্তু হাই সে তুলিতেছে মিনিটে मिनि । কি বলিবার আছে, কি করিবার আছে ? হয় দাঁতের ব্যাথা, নয় মাথা ধরা, নয় জরভাব অথবা আর কিছু অনাদিকে প্রায়ই রাত জাগায়, অন্যদিন সে রাত জাগে নীলার জন্য। সুযোগ পাইলেই নীলা চুপি চুপি নিঃশব্দে কঁদে ।। সজ্ঞানে মনের মত স্বামীলাভের তপস্যা সে কোনদিন করে নাই, কি রকম স্বামী পাইলে সে সুখী হইবে কোনদিন সে কল্পনা তার মনে আসে নাই, সুতরাং আশা ভঙ্গের বেদন তার নাই । আশাই যে করে নাই তার আবার আশাভঙ্গ কিসের ? অনাদির সোহাগেই সোহাগ পাওয়ার সাধ মিটাইয়া নিজেকে সে কৃতাৰ্থ মনে করিতে পারিত, উত্তেজনা ও অবসাদের নাগরদোলায় ক্রমাগত স্বৰ্গ ও নরকে ওঠা-নামা করার যে চিরন্তন প্ৰথা আছে জীবনযাপনের, তার মধ্যে নরকে নামাকে তুচ্ছ আর বাতিল করিয়া দিয়া সকলের মত সেও একটা বিশ্বাস জন্মাইয়া নিতে পারিত যে স্বৰ্গই সত্য, বাকী সব নিছক yo