পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামুদ্রের স্বাদ এ্যাসপিরিন কিনিতে আসিয়া রসময়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলাপ পরিচয়ও করিয়া গিয়াছে। নাম পরেশ, ছাব্বিশ সাতাশের বেশী বয়স হইবে না । রোগী লম্বা অতি সুদৰ্শন চেহারা, টুকটুকে ফর্স গায়ের রঙ । কেবল হাতলহীন নাক-কামড়ানো চশমার জন্য একটু কেমন দেখায়। পরেশ নিজেই রসময়কে ডাকিতে আসিয়াছিল, অধীর হইয়া অপেক্ষা করিতেছিল। রসময়কে দেখিয়াই ব্যগ্ৰভাবে বলিল, “শীগগীর আসুন ডাক্তার বাবু। আমার স্ত্রীর বুক ধড়ফড় করছে। রসময় কয়েকটি প্রশ্ন করিল, কিন্তু পরেশের স্ত্রীর যে ঠিক কি হইয়াছে কিছুই বুঝতে পারিল না। পরেশ নিজেও জানে না ! ব্যাপার। এই, দু'জনে তারা কথা বলিতেছিল, হঠাৎ বুক ধড়ফড়ানি আরম্ভ হওয়ায় পরেশের স্ত্রী বিছানায় শুইয়া পড়িয়াছে, বলিয়াছে, “শীগগীর ডাক্তার ডাকে। আমার বুক ধড়ফড় করছে।” পরেশের বিবৰ্ণ মুখ আর অধীরতা দেখিয়া আর বেশী কিছু রসময় জিজ্ঞাসা করিল না, রতনকে ব্ল্যাডপ্রেসার পরীক্ষার যন্ত্রটা আনিতে বলিয়া ব্যাগটা হাতে করিয়া পরেশের সঙ্গে বাহির হইয়া গেল । প্ৰতিবেশী,-একেবারে পাশের বাড়ীর প্রতিবেশী । তবে নতুন আসিয়াছে, বিশেষ আলাপ পরিচয় ঘনিষ্টত একরকম নাই বলিলেও চলে, ফিটা সম্ভবত ফাকি দিবে না। ফাকি দিলে অবশ্য কিছু বলা চলিবে না, পাশের বাড়ীতে যারা থাকে তারা তো ধরিতে গেলে একরকম আধ্যা ঘরের লোক । বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীর জন্য ডাক্তারি করাই অসম্ভব হইয়া দাড়াইয়াছে। দোতলায় রোগিনীর যরে ঢুকিবার সময়ও রসময় এই কথাগুলি ভাবিতেছিল, বোধ হয়। সেই জন্যই ঘরে আর কেউ না থাকিলেও বুঝিতে পারিল না যে খাটে শায়িতা মহিলাটিই পরেশের স্ত্রী। অবশ্য অন্যমনস্ক (ty"