পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানুষ হাসে কেন্ম ভাবিতেছে দেবেনের সংসারের অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যতেরই কথা, কিন্তু অনুভব করিতেছে নিজের নিজের সংসারের সম্ভবপর ভবিষ্যৎ কল্পনার আতঙ্ক ও বিষাদ । আলোচনা ও কল্পনার প্রসঙ্গ পরিবর্তনের চেষ্টার রসময় বলিল, “কত রকম রোগীই দেখলাম। কেউ রোগ হলে ভাবে কিছুই হয়নি, আবার কেউ রোগ না হলেও ভাবে জগতে যত রোগ আছে সব তাকে ধরেছে।” নিজেকে বিশেষভাবে রোগী মনে করে এরকম কয়েকজন সুস্থ ও সবল মজার রোগীর গল্প রসময় বলিতে লাগিল, সকলে মন দিয়া শুনিতে লাগিল। চা আসিলে কাপে চুমুক দিয়া একজন বলিল, “তা ঠিক, রোগকে সবাই ডরায় ।” তখন রসময় বলিল, “আরও কত মজার রোগী আছে। সেদিন একজনকে দেখতে গিয়েছিলাম, তার সারা গায়ে সুড়সুড়ি। পালস দেখতে যাই হেসে গড়িয়ে পড়ে, থার্মোমিটার দিতে যাই, হাসতে হাসতে দম আটকে আসে-আধঘণ্টা ধরে কি ধস্তাধস্তিই চলল।” সকলে অল্প অল্প হাসিতে লাগিল। বিপিন জিজ্ঞাসা করিল, “পুরুষ না মেয়েলোক হে ?” “মেয়েলোক ৷” সকলের হাসি চরমে উঠিয়া গেল। বিপিন সকলকে হাসায়, নিজে কদাচিৎ হাসে, সে হাসিতে লাগিল সব চেয়ে বেশী। প্রথমটা রসময় খুব খুলী হইয়া উঠিল, তারপর তার মনে হইল, সকলে যেন দেবেনের মৃত্যুসংবাদের পীড়নটা এড়ানোর জন্য হাসিতেছে। একটি স্ত্রীলোক, তার ষষ্টাঙ্গে অস্বাভাবিক সুড়সুড়ি বোধ, রোগ পরীক্ষার জন্য ডাক্তার লড়াই করিতেছে আর হাসিতে হাসিতে তার দম আটকাইয়া আসিতেছে -এ দৃশ্য কল্পনা করিলে কাসি পায়, কিন্তু দেবেনের মরণের জন্য মনের SVN)