পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভিক্ষুক গায়ে পাঞ্জাবী থাক, কঁধে চাদর থাক, পায়ে জুতা থাক, মানুষটা আসলে কেমন, তাতো আর সে জানে না । বাহিরের পোষাকে ভিতরের পরিচয় আর কবে জানা গিয়াছে মানুষের ? সে সহরের চাকুরে-বাৰু, এ খবরটা শুনিয়া যদি লোভ জাগে মানুষটার, অতি সহজে কিছু রোজগার করাধ এমন একটা সুযোগ পাইয়া যদি আত্মসম্বরণ করিতে না পারে, গলাটা টিপিয়া ধরিয়া যদি বলিয়া বসে, “যা কিছু সঙ্গে আছে দাও”-কি হইবে তখন ? তার চেয়ে মিথ্যা বলাই নিরাপদ । “কি করি ? আজ্ঞে, করি না কিছুই।” শুনিয়া যাদবের সঙ্গী খানিকক্ষণ আর সাড়া শব্দ দেয় না। প্ৰকাণ্ড একটা বটগাছের তলা দিয়া যাওয়ার সময় দুজনে গাঢ় অন্ধকারো যেন একেবারে হারাইয়া যায়। অন্ধকার রাত্রে নির্জন পথে আকস্মিক সাক্ষাতের ফলে বিনা ভূমিকায় মানুষের সঙ্গে মানুষের যে সম্পর্কটা স্থাপিত হইয়া গিয়াছিল, বটগাছের তলের গাঢ়তর অন্ধকারটাই যেন তাকে পরিণত করিয়া দেয় নিষ্কৰ্ম্মা বেকার মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কে। পরিণতিটা এত স্পষ্ট হয় যে, সঙ্গীর গলার আওয়াজ শুনিয়া যাদব পর্যন্ত টের পাইয়া যায়। “আপনার চলে কি করে ?” ‘চলে ? আক্তে, চলে আর কই ।” “ছেলে মেয়েকে আনতে যাচ্ছেন বললেন না ?” “আক্তে না, আনতে নয়। দেখতে যাচ্ছি।” বলিতে বলিতে যাদবের খেয়াল হয়, যার দিন চলে না, বিশেষ কোন কারণ ছাড়া পয়সা খরচ করিয়া ছেলে মেয়েকে দেখিতে যাওয়ার সখটা তার পক্ষে একটু খাপছাড়াই হয়। জোরে একটা নিশ্বাস ফেলিয়া আবার তাই সে Sዓ