পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভিক্ষুক কেউ সহানুভূতি জানায়, কেউ ধমক দেয়, কেউ কিছুই দেয় না। একদিন একজন একটা পয়সা গায়ের উপর ছুড়িয়া দিয়াছিল বলিয়া যাদবের অপমান বোধ হইয়াছিল, এখন অনেকেই সেভাবে একটা পয়সা তার গায়ের উপর ছুড়িয়া দেয়-কেউ কেউ একটা আধলা ও দেয় । যাদবের কিন্তু আর দুঃখাও হয় না, অপমানও সে বোধ করে না। মাঝে মাঝে আনি, দুয়ানী, সিকি পাওয়া যায়, কদাচিৎ টাকা আধুলিও আসে। তাতেই সে খুন্সী। তা ছাড়া, কয়েকদিনের রোজগারের হিসাব করিয়া সে দেখিতে পায়, একটি একটি করিয়া যে পয়সা পাওয়া যায়, একত্ৰ করিলে সেগুলি আনী দুয়ানী সিকি আধুলি টাকার চেয়ে অনেক বেশীই দাড়ায় । কাজটা সে এখনো ছাড়ে নাই, আর কিছু রোজগার বাড়িলেই ছাড়িয়া দিবে, ভাবিয়া রাখিয়াছে। কাজের জন্য যে সময়টা নষ্ট হয়। সেটা দুঃখের কাহিন শোনানোর কাজে লাগাইলে হয়তো রোজগার বেশীই হয়, তবু উপার্জনের নতুন উপায়টি আরও একটু ভালভাবে আয়ত্ত না করিয়া কাজটা ছাড়িয়া দেওয়ার সাহস তার 23 नीं । আগে যাদব হাটিয়াই যাতায়াত করিত। আজকাল সময় বঁাচানোর জন্য ট্রামে চাপে। একদিন কাজ সারিয়া বাড়ী ফেরার জন্য ট্রামের অপেক্ষা করার সময় অদূরে ধোপদুৰ্ব্বস্ত জামাকাপড় পরা, চাদর কঁাধে, ছড়ি হাতে বিশিষ্ট চেহারার এক ভদ্রলোককে দেখিয়া সে ভাবিতেছে, লোকটিকে দুঃখের কাহিনী শুনাইয়া দিবে কি না, সে নিজেই ধীরে ধীরে কাছে আগাইয়া আসিল । “আপনাকে একটা কথা বলতে চাই।” চেহারায়, পোষাকে, চলনে, কথায় সবদিক দিয়াই লোকটিকে SQG?