পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূজা কমিটী আশঙ্কাও একটু আছে। পাড়ার যে প্রান্তে গগন বাবুর বাড়ী তার বিপরীত প্ৰান্তের নরেশ বাবুকে প্রেসিডেণ্ট নির্বাচন না করায় এই প্রান্তের অধিবাসীদের উপর ঐ প্রান্তের অধিবাসীদের একটু রাগ হইয়াছিল। তবে সকলেই জানে যে নরেশ বাবু গগন বাবুর মত কাজের লোক নন, গগন বাবুর মত তিনি কথায় আসর মাৎ করিতেও পারেন না, লোকের মন ভিজাইয়া কাজ আদায় করিবার কৌশলও জানেন না, অবস্থা বুঝিয়া ব্যবস্থা করিবার তেমন পটুতাও তার নাই । নরেশ বাবুর ধন-মান, বিদ্যা-বুদ্ধি, প্রভাব-প্রতিপত্তি বেশি হইতে পারে, কিন্তু ওসব দিয়া তো সার্বজনীন দুর্গোৎসব হয় না ! হয়তে হয়, বড় বড় ব্যাপার পরিচালনা করিতে নরেশ বাবুর মত মানুষকেই হয়তো দরকার হয়, যেখানে খুটিনাটি বিষয় লইয়া পরিচালককে মাথা ঘামাইতে হয় না । কিন্তু যেখানে বাড়ী বাড়ী ঘুরিয়া সকলকে সভায় যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করিতে হয়! একদিন প্ৰাতভ্ৰমণে বাহির হইয়াই কাজটা করা যায় বটে, তবু তাও তো বাড়ী বাড়ী ঘোরা ? পাড়ার ছেলেদের তোষামোদ করিয়া চাদ আদায় করিতে পাঠাইতে হয়, পূজামণ্ডপ তুলিবার সময় হইতে প্রতিমা বিসর্জনের পর পূজামণ্ডপ নামাইবার সময় পর্যন্ত বার বার আসিয়া কৰ্ত্তালি করিয়া যাইতে হয়, সেখানে নরেশবাবুকে দিয়া কাজ চলে না। যতীনবাবু বলিলেন, ‘কেউ তো আসছেন না।” যতীনবাবুকে গতবার সম্পাদক করা হইয়াছিল। পূজার সমস্ত কাজ একরকম তিনিই করিয়াছেন। সমস্ত খুটিনাটি ব্যাপারে প্রেসিডেণ্ট নির্দেশ ও উপদেশ দিয়াছিলেন বটে, কাজ হওয়ার সময় নিজে উপস্থিত থাকিয়া উৎসাহিত করিতেও ভুলেন নাই, কিন্তু কাজ সব করিতে হইয়াছে সম্পাদককে । মণ্ডপ বাধা, প্রতিমা আনা, পুরোহিত্য, ঢুলি, চাকর ঠিক করা, বাজার SQS)