পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অ্যাপিম বলিবার ছিল না, কিন্তু এখন যখন সপরিবারে ধরিতে গেলে একরকম ভাই-এর ঘাড়ে চাপিয়া আছে, এখন একদিনের জন্য দরকার হইলে কেন সে যাইবে না ? কথাটা বুঝাইয়া বলিতে নরেনও সায় দিল, তারপর সন্দিগ্ধভাবে বলিল, ‘দাদা কি যাবে ? ক’লা কতটা গিলে ঘুমোচ্ছে কে জানে, ডেকে তুলতেই প্ৰাণ বেরিয়ে যাবে। দাদার কথা বাদ দাও।” “বডড পাড়াবাড়ি করছেন। আজকাল ।” নরেন এ কথাতেও সায় দিল। বলিল, “কি জান, শোকে তাপে এরকম হয়েছেন। বৌদি মারা যাবার পর থেকে-” ‘তার আগে বুঝি খেতেন না ?” “তা খেতেন, তবে সে নামমাত্র, এতটা বাড়েনি।” ‘আপিমের নেশা বাড়ালেই বাড়ে।” মায়া উঠিয়া গেল, বাজারে পাঠাইয়া দিল ঠিক কি কালিদাসীকে । বাড়তি একটা কাজও কালিদাসী করে না, এক গ্লাদ জল গড়াইয়া দিতে বলিলেও গজির গজর করে, কিন্তু বাজারে পাঠাইলেই যায়। পয়সা তো চুরি করেই, মাছ তারকারীও কিছু কিছু সরায়, ভিন্ন একটা পুটুলি বাধিয়া আনিয়া নিৰ্ভয়ে মায়াকে দেখায়, অন্তরঙ্গ ভাবে একগাল হাসিয়া বলে, “ঘরের বাজারটাও এই সাথে সেরে এলাম মা । গরীবের বাজার দেখেছি মা, দুটি আলু, দুটি ঝিঙে—” মায়া বিশ্বাস করে না যে, তাদের বাজার হইতে সরানো এই সামান্ত জিনিষেই কালিদাসীর বাড়ীর সকলের পেট ভরে। তবে সে আরও যে তিনটি বাড়ীতে কাজ করে তাদের প্রত্যেকের বাজারে এরকম ভাগ বসাইলে চলিয়া যাইতে পারে বটে। মাঝ বয়সী এই স্ত্রীলোকটির আঁটিসাট গড়ন আর চালচলন সমস্তই মায়ার চক্ষুশূল, কি 8y