পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ “দেখি”-বলিয়া নরেন চলিয়া গেল । জবাবটা হবেনের তেমন পছন্দ হইল না। অন্তত আজকের দিনটা চলিয়া যায়। এরকম সামান্য পরিমাণে আপিম নরেন। কিনিয়া আনিবে এটুকু ভরসা ও কি করা চলে, এরকম জবাবের পর ? যদি না আনে ? অসময়ে সে ফিলিয়া আসিবে, তারপর হয় তো হাজার চেষ্টা কবিয়াও এক রতি আপিমও সংগ্ৰহ করা চলিবে না। কি সৰ্ব্বনাশ!-সন্ধ্যার সময় একটু আপিম না হইলে তার চলিবে কেন ? কথাটা ভাবিতে গিয়াই তার হৃৎকম্প উপস্থিত হয়। বিমল কলেজ যাওয়ার জন্য প্ৰস্তুত হইলে বিমলকে সে ডাকে, গলা যথাসম্ভব মিহি কারিয়া বলে, “কলেজ যােচ্ছ ? তোমার কাছে টাকা আছে, একটা দিতে পার আমায় ?” বিমল বলে, “আছে, তোমায় দেব না।” ‘কেন ?” ‘আপিম খেয়ে খেয়ে তুমি গোল্লায় যাবে আর আমি-” হরোনের আধবোজা চোখ দুটি যেন এমন শ্ৰান্ত যে আড়াচোখে ভাইপোর মুখের দিকে তাকানোর পরিশ্রমটুকু করিবার ক্ষমতাও চােখের নাই। চােখ দুটি একেবারে বুজিয়া ফেলিয়া বলে, “আচ্ছা, থাক থাক। দরকার নেই।” স্নানাহারের পর হরেন আধ ময়লা একটি পাঞ্জাবী গায়ে দিয়া নিজেই বাহির হইয়া যায়। আপিম ছাড়া তো চলিবে না, যে ভাবেই হোক যোগাড় করিতেই হইবে। এদিকে অপিসে কাজ করিতে করিতে নরেনের মনটা খুঁত খুঁত করে। প্রথমটা হরেনের মঙ্গলের জন্য নিজের দৃঢ়তা প্রদর্শনের কথা ভাবিয়া বেশ গর্ব বোধ করিতেছিল, অপিসে পৌছিতে পৌছিতেই 88