পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

布博可 পায় সেজন্য চেষ্টা করিয়াছে ? কেবল তার চােখ দুটিকে একটু কৃত্রিমতার আড়ালে রাখা ছাড়া ? তার সমস্ত ত্রুটিবিচু্যতি বিকাশ হাসিমুখে মানিয়া নিয়াছে, তার গুণগুলিকে পর্যন্ত তুচ্ছ করিয়া রাখিয়াছে সহজ অবহেলায়। এমন সুন্দর দেহের গড়ন রাণীর, অনেক ভদ্রতা-অভ্যস্ত ভদ্রলোক পৰ্যন্ত চাহিয়া না থাকিয়া পালে না, কিন্তু আজ পর্যন্ত বিকাশের চােখে পড়িয়াছে কিনা সন্দেহ । চোখ নিয়া এত যদি বাড়াবাড়ি বিকাশ না রত, কাজলহীন চোখ তাকে দেখাক-বা-না-দেখাক, চোখে যে সে একটু কাজল দেয়, এ কথাটা একদিন কি সাহস করিয়া স্বীকার করিয়া ফেলিতে পালিত না বিকাশের কাছে । এইসব ভাবিতেছে। রাণী, এ বাড়ীর কর্তা তার কাকা মাধববাবুর সেজ মেয়ে নলিনী নীচে হইতে তীক্ষা কণ্ঠে ডাকিয়া বলিল, “ওগো মহারাণি ! আপনার জন্যে এক ভদ্রলোক যে বাইরের ঘরে বসে আছেন। একঘণ্টা।” রাগে গ’টা যেন রাণীর জালিয়া গেল। চোখে কাজল দেওয়ার উপর তাকে ভাল লাগ-না-লাগা নির্ভর করিবে কেন ভাবিয়া বিকাশের উপর মনের মধ্যে একটা দুর্বোধ্য বিতৃষ্ণা সঞ্চারিত হইতেছিল, নলিনীর অভদ্র হাক শুনিয়া সমস্ত রাগটা গিয়া পড়িল এ বাড়ীর হিংসুটে মানুষগুলির উপর। গট গট করিয়া সে নীচে নামিয়া গেল । চোখে আর কাজল দেওয়া হইল না। সন্ধ্যা পার হইয়া গিয়াছে। কে জানিত আত্মচিন্তার সময় এত তাড়াতাড়ি চলিয়া যায় ! বাহিরের ঘরটি অন্ধকার, জানালা দিয়া রাস্তার একটু আলো আসায় কেবল টের পাওয়া যায় একটি আবছা! মৃতি একটা চেয়ার দখল করিয়া বসিয়া আছে। V