পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ হয়! ওগো শুনছ, ছুটে একবার পোষ্টাপিসে যাও, দাদাকে একটা তার করে দাও বাসু এখানে এসেছে, আর-’এতক্ষণে ভাল করিয়া দিবাকরের মুখের দিকে চাহিয়া পিসী চাঞ্চল্য হারাইয়া ফেলিল, --তোমার নাম কি বাছা ? দিবাকর ?” দুজনে পিসীর কাছেই স্থায়িভাবে থাকিয়া গেল । দিবাকর কেন থাকিয়া গোল কৃত্তিবাসের পিসী অথবা পিসেমশায় ভাল করিয়া বুঝিয়া উঠিতে পারিল না, তাকে এখানে থাকিতে দিয়া তার লেখাপড়া ভারণ পোষণ সেবাযত্নের ভারটাই বা এতখানি খুলী মনে নিজের ঘাড়ে তুলিয়া নিতেছে কেন তাও তাদের মাথায় ঢুকিল না। প্রথম দিকে একবাল কথা উঠিয়াছিল দিবাকরেব ফিরিয়া যাওয়ার, পিসী তখন বলিয়াছিল “থাক না এখন তাড়াহুড়োব কি আছে!” কিছুদিন পরে পিসেমশায় আবার যখন ভাসা ভাসাভাবে কথাটা তুলিল পিসী স্পষ্টই বলিয়া দিল, “না, দিবু যাবে না। ওকে তাড়াবার জন্য তুমি এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছ কেন ?” পিসেমশায় আমতা আমতা করিয়া বলিল, “তাড়াবার জন্য নয় । ওর বাপ ম{ রাগ করতে পারে, তাই বলছিলাম।” পিসী হাসিয়া বলিল, “রাগ করবে না ছাই করবে। অ্যাদিনের মধ্যে একটা চিঠি লিখে ছেলের খোজ নিল না, রাগ করবে। বাসু যায় তো যাক, দিবু যাবে না।” পিসীর মেজাজটা একটু খাপছাড়া কিন্তু গরম নয়। চোখের জল ফেলিতে ফেলিতে সে উঁচু নীচু আঁকা বঁকা ঝকঝকে দাত বাহির করিয়া অনায়াসে হাসিতে পারে, রাগে গা জলিয়া গেলেও মিষ্টি কথা বলিতে পারে ! কেবল পারে না মানুষকে ধমক দিতে বা শাসন করিতে । শুষ্ক শীর্ণ শরীরে তার জোর নাই, শুধু আছে মুখের অনর্গল কথার ছন্দে ক্রমাগত হাত নাড়ার ছটফটানি ; দুর্বল মনে তার br.