পাতা:সমূহ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
সমূহ

অমঙ্গল ঘটিকার সম্ভবনা, তাহার প্রতিকার করিবার জন্য দেশের মধ্যে কোথাও কোনাে ব্যবস্থা থাকিবে না? ব্যাধির বীজ বাহির হইতে শরীরের মধ্যে না প্রবেশ করিলেই ভাল কিন্তু তবু যদি প্রবেশ করিয়া বসে, তবে শরীরের অভ্যন্তরে রােগকে ঠেকাইবার, স্বাস্থ্যকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করিবার কোন কর্তৃশক্তি কি থাকিবে না? সেই কর্তৃশক্তি যদি আমরা সমাজের মধ্যে সুদৃঢ়-সুস্পষ্ট করিয়া রাখি, তবে বাহির হইতে বাংলাকে নির্জীব করিতে পারিবে না। সমস্ত ক্ষতকে আরােগ্য করা, ঐক্যকে আকর্ষণ করিয়া রাখা, মূৰ্জিতকে সচেতন করিয়া তােল। ইহারই কর্ম্ম হইবে। আজকাল বিদেশী রাজপুরুষ সৎকর্মের পুরস্কারস্বরূপ আমাদিগকে উপাধি বিতরণ করিয়া থাকেন কিন্তু সৎকর্মের সাধুবাদ ও আশীৰ্বাদ আমরা স্বদেশের কাছ হইতে পাইলেই যথার্থভাবে ধন্য হইতে পারি। স্বদেশের হইয়া পুরস্কৃত করিবার শক্তি আমরা নিজের সমাজের মধ্যে যদি বিশেষভাবে স্থাপিত না করি, তবে চিরদিনের মত আপনাদিগকে এই একটি বিশেষ সার্থকতাদান হইতে বঞ্চিত করিব। আমাদের দেশে মধ্যে মধ্যে সামান্য উপলক্ষ্যে হিন্দু- মুসলমানে বিবােধ বাধিয়া উঠে, সেই বিবােধ মিটাইয়া দিয়া উভয় পক্ষের মধ্যে প্রীতিশান্তিস্থাপন, উভয় পক্ষের স্ব স্ব অধিকার নিয়মিত করিয়া দিবার বিশেষ কর্তৃত্ব সমাজেব কোনো স্থানে যদি না থাকে, তবে সমাজকে বারেবারে ক্ষতবিক্ষত হইয়া উত্তরােত্তর দুর্বল হইতে হয়।

 নিজের শক্তিকে অবিশ্বাস করিবেন না, আপনারা নিশ্চয় জানিবেন— সময় উপস্থিত হইয়াছে। নিশ্চয় জানিবেন—ভারতবর্ষের মধ্যে একটি বাঁধিয়া তুলিবার ধর্ম চিরদিন বিরাজ করিয়াছে। নানা প্রতিকুলব্যাপারের মধ্যে পড়িয়াও ভারতবর্ষ বরাবর একটা ব্যবস্থা করিয়া তুলিয়াছে; তাই আজও রক্ষা পাইয়াছে। এই ভারতবর্ষের উপরে আমি বিশ্বাসস্থাপন করি। এই ভারতবর্ষ এখনি এই মুহূর্তেই ধীরে ধীরে নূতনকালের সহিত