পাতা:সমূহ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাবনা প্রাদেশিক সম্মিলনী।
৭৫

নিয়মের দ্বারা সংযত হইয়াও প্রত্যেক মতকেই প্রাধান্য লাভের চেষ্টা করিতে না দিলে এরূপ সভার স্বাস্থ্য নষ্ট, শিক্ষা অসম্পূর্ণ ও ভবিষ্যৎ পরিণতি সঙ্কীর্ণ হইতে থাকিবে। অতএব মতবিরোধ যখন কেবল মাত্র অবশ্যম্ভাবী নহে, তাহা মঙ্গলকর, তথন মিলিতে গেলে নিয়মের শাসন অমোঘ হওয়া চাই। নতুবা বরযাত্রী ও কন্যাপক্ষে উচ্ছঙ্খলভাবে বিবাদ করিয়া শেষকালে বিবাহটাই পণ্ড হইতে থাকে। যেমন বাষ্পসংঘাতকে লোহার বয়লারের মধ্যে বাঁধিতে পারিলে তবেই কল চলিতে পারে তেমনি আমাদের মত-সংঘাতের আশঙ্কা যতই প্রবল হইবে আমাদের নিয়ম-বয়লাও ততই বজ্রের ন্যায় কঠিন হইলে তবেই কর্ম অগ্রসর হইবে নতুবা অনর্থপাত ঘটিতে বিলম্ব হইবে না।

 আমরা এ পর্যন্ত কন্গ্রেসের ও কন্ফারেন্সের জন্য প্রতিনিধি-নির্বাচনের যথারীতি নিয়ম স্থির করি নাই। যতদিন পর্যন্ত, দেশের লোক উদাসীন থাকাতে, রাষ্ট্রীয় কর্তব্য সম্বন্ধে আমাদের মধ্যে কোনো মতের দ্বৈধ ছিল না ততদিন এরূপ নিয়মের শৈথিল্যে কোনো ক্ষতি হয় নাই। কিন্তু যখন দেশের মনটা জাগিয়া উঠিয়াছে তখন দেশের কর্মে সেই মনটা পাইতে হইবে, তখন প্রতিনিধিনির্বাচনকালে সত্যভাবে দেশের সম্মতি লইতে হইবে। এইরূপ শুধু নির্বাচনের নহে, কন্গ্রেস্ ও কন্ফারেন্সের কার্যপ্রণালীরও বিধি সুনির্দিষ্ট হওয়ার সময় আসিয়াছে।

 এমন না করিয়া কেবল বিবাদ বাঁচাইয়া চলিবার জন্য দেশের এক এক দল যদি এক একটি সাম্প্রদায়িক কন্গ্রেসের সৃষ্টি করেন কন্গ্রেসের কোনো অর্থই থাকিবে না। কন্গ্রেস্ সমগ্র দেশের অখণ্ড সভা—বিঘ্ন ঘটিবামাত্রই সেই সমগ্রতাকেই যদি বিসর্জন দিতে উদ্যত হই তবে কেবল মাত্র সভার সংখ্যা বৃদ্ধি করিয়া আমাদের এমনই কি লাভ হইবে!

 এ পর্যন্ত আমরা কোনো কাজ বা ব্যবসায়, এমন কি আমোদের