পাতা:সম্রাট্‌ ও সম্রাট্‌-মহিষীর ভারত পরিদর্শন - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-পরিদর্শন। Σ ΣΣ) কোলাপুরে রাজ্য করিতে থাকেন। কোলাপুর এখন ব্রিটিশ গবৰ্ণমেণ্টের কৃপায় এই বংশের হস্তে আছে। কোলাপুরের বর্তমান মহারাজ সাহু ছত্রপতি মহারাজ দরবারে উপস্থিত ছিলেন । ইনি ১৯০২ সনে লণ্ডনে এবং ১৯০৩ সনে দরবার-উপলক্ষে দিল্লীতে গিয়াছিলেন । কালক্রমে মারাঠা সৌভাগ্য-সূৰ্য অস্তমিত হইলে ইহঁদের সেনানায়কগণ স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন । ইহাদের তিনটি আজ পৰ্যন্তও বৰ্ত্তমান আছে । তাহদের নাম বরদা, গোয়ালিয়ার এবং ইন্দোর। বোম্বাই প্রেসিডেন্সীতে বরদারাজ্যই আয়তনে সর্বাপেক্ষা বৃহৎ । বরদারাজ মহারাজ সারা সয়াজীরাও গাইকোয়ার রাজ্য পরিচালনে সুদক্ষ । মহারাজের শাসনপ্ৰণালী আধুনিক সভ্যজগতের আদর্শানুযায়ী। বৰ্ত্তমান মহারাজের সময়ে বরদারাজ্যের সর্বববিষয়ে উন্নতি হইয়াছে | গোয়ালিয়রের মহারাজ। সার মাধোরাও সিন্ধিয়া বাহাদুর রাজ্যশাসনে এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ে ভারতগবৰ্ণমেণ্টের সুখ্যাতিলাভ করিয়াছেন। বিগত চীন যুদ্ধ এবং দরবারউপলক্ষে তিনি বিবিধ অনুষ্ঠান দ্বারা সরকারকে সাহায্য করিয়া প্ৰতিষ্ঠা অর্জন করিয়াছেন। দরবারের জন্য তিনি স্বয়ং যথেষ্ট পরিশ্রম করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, নিজের রাজ্যটির জনবল ও অর্থবল সমস্তই দরবারের কাৰ্য্যের জন্য বড়লাট বাহাদুরের হস্তে সমর্পণ করিয়াছিলেন। ইন্দোর রাজ তুকাজিরাও হোলকার স্বীয় মন্ত্রী নানকচাঁদ সহ দিল্লীতে আসিয়াছিলেন। ঃপর ও শিখজাতির কথা । শিখরাজ্যসমূহ মহারাষ্ট্রীয়দিগের ন্যায় রাষ্ট্রীয় উন্নতিকে আদর্শক্তজ্ঞান করিয়া গঠিত হয় নাই। শিখজাতি একটি ধৰ্ম্মসম্প্রদায়। বিগত পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে নানক নামক এক মহাপুরুষ শিখধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি লোকান্তরিত হওয়ার পর ক্ৰমান্বয়ে দশজন গুরু” শিখজাতির নায়করূপে প্রতিষ্ঠিত হন। মুসলমানগণের ভয়ানক অত্যাচারেও শিখগণ স্বধৰ্ম্ম বিচু্যত হন নাই। মোগলদিগের অধঃপতনের পর হইতে শিখজাতি শুধু “ধৰ্ম্মসংঘ” না হইয়া রাজ্য গঠনে মনোনিবেশ করিল। “পঞ্জাবকেশরী” মহাত্মা রণজিৎ সিংহ এমন দুৰ্দ্ধাষা শিখরাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন যে তাহার মৃত্যুর পরে ইংরেজদিগের সহিত শিখগণের তুমুল সংগ্ৰাম আরম্ভ হয়। পেনিনসুলার ও ওয়াটালু যুদ্ধের অন্যতম প্ৰবীণ নায়ক লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৮৪৪ খৃষ্টাব্দে বড়লাট রূপে ভারতে আগমনপূর্বক ভীষণ সংগ্রামের পর লাহোর অধিকার করেন ।