পাতা:সম্রাট্‌ ও সম্রাট্‌-মহিষীর ভারত পরিদর্শন - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(2b7ʼ ভারত-পরিদর্শন । গিয়াছে। পুরাতন তক্ষশীলা একবারে লুপ্ত হইয়াছে, বিজয়নগরের অস্তিত্ব শুধু ইতিহাসে বৰ্ত্তমান, ফতেপুৱসিক্রি প্রাণহীন দেহে পরিণত হইয়াছে। ভূধরাশ্ৰিত পবিত্র মহানগর রোমের ন্যায় দিল্লী কালচক্রের ঘোর পরিবর্তনের মধ্যে এখনও প্ৰাণধারণ করিয়া আছে। এই নগরীর ইতিহাস ভারতবর্ষের ইতিহাসের সঙ্গে অবিছিন্নভাবে জড়িত। ইহার ভূমি প্ৰাচীনতর যুগের “শস্যের তুষে” পূর্ণ বলিয়া অবজ্ঞার সামগ্ৰী নহে। “পথিভ্ৰান্ত নৈশপথিক অন্ধকারাচ্ছন্ন প্ৰস্তারমধ্যে ইতস্ততঃ ভ্ৰমণ করিবার সময় এখনও সৈন্যদলের প্ৰেতাত্মাদের বিজয় চীৎকার এমন কি তাহদের অন্ত্রশস্ত্রের ঝনৎকার, এবং অশ্বরাজির হ্রেষারব শুনিয়া থাকে৷ ” এরূপ কিংবদন্তী সত্ত্বেও দিল্লী প্ৰেতপুৱীতে পরিণত হয় নাই। বহু শতাব্দী যাবৎ এই ঘটনাপ্রবাহ দ্বন্দ্বকোলাহলপূর্ণ। কিন্তু দিল্লীর একটা গৌরবের দিক আছে। প্রাচীনতর যুগের যবনিকা উদঘাটন করিলে সেই দিকটা উজ্জ্বল হয় ; নব নব সভ্যতার স্রোতঃ এই মহাকেন্দ্ৰ হইতে সমস্ত ভারতে প্ৰবাহিত হইয়াছে। ইহার অতীত স্মৃতি চিরকাল পবিত্র ও গৌরবময়। এই নগরী চির-ঐশ্বৰ্য্য ও উন্মাদনাময়, সমস্ত ভারতের রক্ত এই কেন্দ্ৰ হইতে উৎসারিত। এমন স্থান ছাড়িয়া ভারতসম্রাটু কোথা হইতে আবার তাহার প্রজাপুঞ্জকে দেখা দিবেন ? ইংরেজাদিগের চক্ষেও কি দিল্লী পবিত্ৰ নহে ? তাহাদিগের নিকট “এরূপ করুণামৃতিজড়িত গৌরবময় নগরী সাম্রাজ্যে আর দ্বিতীয় নাই।” ইহার রাজপথ দিয়া লেক একদিন বিজয়গৌরবে অশ্বারোহণে গমন করিয়াছিলেন। ইহার সিংহদ্বার সম্মুখে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হইয়াছিল ; ইহার প্রাচীরসমূহ মহারাণী ভিক্টোরিয়ার “সম্রাজ্ঞী” উপাধিগ্ৰহণকালীন ঘোষণ-উপলক্ষে কামানের বিজধবনিতে ধবনিত হইয়াছিল । এই মহানগরী সমগ্রভারতের “প্ৰথম ব্রিটিশসাম্রাটের সিংহাসনাধিরোহণ-উপলক্ষে কামানের গভীরমন্দ্ৰ শ্ৰবণ করিয়াছিল।” নবসম্রাটু যে এই নগরীতে পদার্পণ করিবেন, তাহাতে আশ্চৰ্য্য হওয়ার কথা কি ? ভারতের এই পুরাতন রাজধানীকে দরবারের জন্য সম্রাট স্বয়ং निर्किंडे করিয়াছিলেন। ভারতের যাহা কিছু শুভ ও হিতকর সম্রাটু তৎসমুদয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট হইতে ইচ্ছক ছিলেন। ভারতবর্ষের প্রাচীন ংস্কারগুলির প্রতিও তিনি শ্রদ্ধাপরায়ণ ছিলেন। যুবরাজরূপে ভারতপরিদর্শন করিয়া সম্রাটু স্বদেশে প্ৰত্যাবৰ্ত্তনানান্তর, বলিয়াছিলেন, “আমরা