পাতা:সম্রাট্‌ ও সম্রাট্‌-মহিষীর ভারত পরিদর্শন - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-পরিদর্শন। GłGD ভারতের যাহা কিছু দেখিয়াছি, তাহাতেই এইদেশ আমাদের অনুরাগের সামগ্ৰী হইয়া দাড়াইয়াছে। আমরা ভারতসম্বন্ধে আরও অধিক তথ্য জানিতে চাই,-জাতিবর্ণ নির্বিশেষে এই দেশবাসী সকলের সঙ্গে আমাদের শ্ৰীতি ও অনুরাগ আরও বদ্ধমূল হয় এবং ইহঁদের সর্বপ্রকার হিতানুষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের হৃদয়ের সংযোগ হয়। ইহাই আমার ঐকান্তিক বাসনা ।” এই দিল্লীই ভারতীয় প্রজাপুঞ্জের জাতীয় ইতিহাসের কেন্দ্ৰস্বরূপ এবং দেহে যেরূপ মৰ্ম্মস্থান-সমস্ত ভারতবর্ষের পক্ষে দিল্লীও তাঁহাই-এইজন্য স্বভাবতই তাহার দিল্লীতে দরবার করিবার সংকল্প হইয়াছিল। দিল্লী যখন ভারতের রাজধানী ছিল, তখন তাহাতে বিংশতিলক্ষ লোক বাস করিত, এরূপ বিবরণ পাওয়া যায়। বলা বাহুল্য এখন এই নগরের সেরূপ কোন গৌরব নাই। ইহা এখন ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত সামান্য গৃহ ও দুৰ্গন্ধপূর্ণ গলিতে পরিপূর্ণ। ইহার চতুর্দিকে বহুক্রোশব্যাপক ধ্বংসচিহ্ন এবং সম্রাটগণের সমাধি। বৰ্ত্তমান কালে আড়াই শত বর্ষের অধিক পূর্বের গৃহাদি ইহাতে নাই বলিলে অত্যুক্তি হয় না। ইহার বহির্ভাগে ক্ষুদ্র শ্বেতাঙ্গাপল্পী। মোগলরাজত্বের শেষকালে দিল্লীর বহিঃপ্রাচীরের সন্নিকটে এমন কি অন্তর্ভাগেও ইহার নামে মাত্র রাজগণের অর্থগৃধ্ৰুতায় সর্বদা যুদ্ধবিপ্লব ঘটায় দিল্লীর স্বাভাবিক উন্নতির পথে বিশেষ বিঘ্ন ঘটিয়াছিল। অবশেষে ইংরাজশাসনের সময় ইহার গর্ব। আরও খর্ব হয়, পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরের নীচে ইহার আসন প্ৰদান করা হয় । ক্ৰমে ইহা দ্বিতীয় শ্রেণীর সামান্য নগরে পরিণত হইয়া যথাসম্ভব অল্পব্যয়ে শাসিত হইতে লাগিল । এমন একদিন ছিল যখন দিল্লীবাসী রাজপ্রাসাদের নির্দিষ্ট স্থানে সম্রাটুকে দিবসে একবার দর্শন না করিয়া আহাৰ্য স্পর্শ করিতেন না। সাজাহানের ন্যায় সম্রাটুগণ শুধু প্ৰজাদিগের এই ব্ৰত উদযাপনের জন্য প্ৰত্যহ করে।াকা হইতে একবার দর্শন দিতেন । আজ আর দিল্লীর সে সুদিন নাই, কারণ ইহা আর ভারতসাম্রাজ্যের কেন্দ্ৰ নহে। এখন স্বল্পসংখ্যক রাজকৰ্ম্মচারী ও নিতান্ত অল্প কয়েকদল দুৰ্গস্থিত সৈন্য ইংরেজ গবৰ্ণমেণ্টের শাসন প্রচার করিতেছে। সত্য বটে কদাচিৎ রাজপ্ৰতিনিধি কিংবা ছোটলাট বাহাদুর পরিদর্শনার্থে দিল্লীতে পদার্পণ করেন, কিন্তু পুরাতন ঐশ্বৰ্য্যের স্বপ্ন এখন একবারে চলিয়া গিয়াছে। এই সকল ব্যাপারের মধ্যে দিল্লীর সেই প্ৰাচীন সমৃদ্ধির কিছু চিহ্ন যে এখনও থাকিতে পারে, তাহা আশাচৰ্য্যের বিষয়। কিন্তু সেই আশাচৰ্য্যের বিষয় এই যে দিল্লীর