পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতিভূষণ ; সরস গল্প ভীষণ ভিড়ের মধ্যে রায় বাহাদুর অতিকষ্টে আইনস্টাইনকে লইয়া গেটের দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলেন । আইনস্টাইন অত বুঝিতে পারেন নাই, তিনি ভাবিলেন। তঁহাকেই দেখিবার জন্য এত লোকের ভিড় । রায় বাহাদুরকে জিজ্ঞাসা করিলেন,- “এরা সবাই কি স্থানীয় ইউনিভারসিটির ছাত্ৰ ? এদের সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দেবেন না। মিঃ মুখার্জি ?” রায় বাহাদুর এই উদার সরলপ্ৰাণ বিজ্ঞানতপস্বীর ভ্ৰম ভাঙাইবার। চেষ্টা করিলেন না । রানাঘাটে আবার ইউনিভার্সিটি ! হায় রে, এ দেশ কোন দেশ তা ইনি এখনও বুঝিতে পারেন না। সবাই ইউরোপ নয় । নীরেনবাবু চাহিয়া-চিন্তিয়া স্থানীয় প্ৰসিদ্ধ ব্যবসায়ী ধনী গোপাল পালেদের পুরোনো ১৯১৭ সনের মডেলের গাড়ীখানি যোগাড় করিয়াছিলেন । তাহতেই সকলে মিলিয়া চড়িয়া মিউনিসিপ্যাল হলের দিকে অগ্রসর হইলেন । গাড়ীতে উঠিবার সময় দেখা গেল তখনও বহু লোক স্টেশনের গেটের দিকে ছুটিতেছে। একজন কে বলিতেছিল,-“গাড়ী অনেকক্ষণ এসেছে, ঐ দেখা লেগে আছে প্ল্যাটফর্মে । শীগগির ছোট ।” ভিড়ের মধ্যে কে উত্তর দিলে,-“এখান দিয়েই তো বেরুবেন, আর ভিড়ের মধ্যে গিয়ে দরকার নেই। বডড ভিড় । ও তো চেনা মুখ । দেখলেই চেনা যাবে। কত ছবিতে দেখা আছে । সেদিনও “মিলন” ফিলমে-” আইনস্টাইন কৌতুকের সঙ্গে বলিলেন,-“এরাও ছুটছে স্টেশনে বুঝি। ওরা জানে না যাকে দেখতে চলেছে সে তাদের সামনেই গাড়ীতে উঠেছে। বেশ মজা, না ? মিঃ মুখার্জি, এখানে ইউনিভার্সিটি কোন দিকে ?” সৌভাগ্যক্রমে ভিড়ের মধ্যের একটা লোক আইনস্টাইনের গাড়ীর সামনে আসিয়া চাপা পড়-পড় হওয়াতে হঠাৎ ফুটব্ৰেক কষার কর্কশ V98