পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতিভূষণ ; সরস গল্প কষ্টে চাপিলাম ! পাথরে বঁাধানো অনেকগুলি সিড়ি ভাঙিয়া উপরে উঠিলাম ? সিঁড়ির দু-ধারে অসংখ্য বন্য আতা, পড়াসি ও তিন্দুক গাছের নিবিড় বন। ডান দিকে অনাবৃত পর্বতগাত্র হেলিয়া থাকিয়া দৈত্যপুরীর মাইলস্টোনের মত দেখাইতেছে। সন্ধ্যার ধূসর ছায়ামাখা নিস্তব্ধতার মধ্যে পেশোয়াদের নির্মিত এই শৈলমন্দির দুর্গটি ভারতের অতীত গৌরবের বার্তা বহন করিয়া আনিয়া দিতেছিল আমাদের কানে কানে । শুধু সে গাম্ভীৰ্যময় নিস্তব্ধতার তপোভঙ্গ হইতেছিল মূলোর অসম্ভব বকুনি দ্বারা। উপরে উঠিয়া আমরা বিগ্ৰহ দৰ্শন করিলাম। সামান্য কিছু প্ৰসাদ ও চরণামৃত পাইলাম। উচু পাহাড়ের উপর মন্দির, অনেক নীচে একদিকে রামটেকের বাজার । মুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা হইত, যদি সে এখানে আসিয়া মিস সোরাবাজি সম্বন্ধে কিছু বলিত—আমরা ভাবিতাম লোকটার প্রাণে তবুও কবিত্ব আছে। কিন্তু মন্দির-দুর্গের চওড়া প্ৰাচীরের উপর বসিয়া আমরা যখন দূরের জ্যোৎস্নালোকিত খিনসি হ্রদের দিকে চাহিয়া আছি, মন্দিরে প্রাচীন মারাঠী পুরোহিত রামসীতার আরতি করিতেছেন, পেশোয়াদের আমলের প্রথানুযায়ী আরােতর সময় গম্ভীর নির্ঘোষে রণবাদ্য দামামা ও ডগর বাজিতেছে, ঐদিকে বহুদূরে কামটি ক্যােণ্টনমেন্টের ক্ষীণ সারি, তখন যদি সে তাহার প্রণয়িনীর কথা তুলিত—আমরা ভাবিতাম। এই রামগিার আশ্রমে জনকতনয়ার স্নান হেতু পুণ্যোদকের স্পর্শে হর্স র্যাডিশ বুঝি কালিদাসের বিরহী যক্ষের দশা পাইয়া বসিল । কিন্তু তাহা হইবার নয়, সে মহাড়ম্বরে গল্প জুড়িয়া দিল-দেশের এক মিউনিসিপ্যাল কমিশনারকে সে কি করিয়া ভোট যোগাড় করিয়া দিয়াছিল। তাহা হইতে নামিল তাহদের দেশে কি করিয়া “ফুটেরি” তৈরি করে। আমরা কহিলাম -ফুটেরি কি? মুলো হাত দিয়া গোলাকার জিনিস দেখাইবার ইঙ্গিতে বলিল-এই ኢ9bም