পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভশহরতলী পৌঁছিয়াছে বলিয়াই নিভিয়া যায় না। আকস্মিক এবং হয়তো ক্ষণিক উচ্ছাসের অসংযমকে একেবারে বর্জন করা মানুষের পক্ষে কঠিন। রামায়ণ মহাভারতে যশোদা মুনি ঋষিরও অনেক অসংযমের কাহিনী পড়িয়াছে। কিন্তু সে সব হঠাৎ-জাগা ভালবাসা জাগাইত অনন্যসাধারণ রূপবতী যুবতী মেয়েরা। যশোদাকে দেখিলে রাস্তার গুণ্ডাও যে छएकईशा यांश ! সত্যপ্রিয়কে যশোদা ভাল করিয়াই চেনে, এক এক সময় ব্যাপারটা তার বড়ই কৌতুকজনক মনে হয়, আবার পরীক্ষণে সে বুঝিতে পারে এর মধ্যে কৌতুকের কিছু নাই, বিষয়টা অতীব গুরুতর। সত্যপ্রিয় ষা কিছু চায়, প্ৰচণ্ড আবেগের সঙ্গেই চায়। প্ৰত্যেকটি কামনার। এরকম অস্বাভাবিক প্ৰচণ্ডতাই সত্যপ্রিয়কে এরকম হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর করিয়াছে। ৰিয়ক্তি বোধ করিলে ভূমিকম্পের জন্য সত্যপ্রিয় পৃথিবীকে পদাঘাত করিয়া ছাড়ে। পায়ে একটা কঁাটা ফুটিলে হয়তো জগতের সমস্ত কঁাটা নষ্ট করিয়া ফেলা সম্ভব কিনা। এই কল্পনাকেও সে প্রশ্ৰয় দেয় । কিন্তু সে ভাববিলাসী নয়, বাস্তবকে সে এড়াইয়া চলে না,- তার মত হিসাবী, দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ, ফন্দিবাজ, সংযমী আর স্বার্থপর মানুষ যশোদা খুব কমই দেখিয়াছে। মানুষকে পায়ের নীচে চাপিয়া রাখার কামনা সম্বন্ধে হয়তো সে অসংযত, নিজের মতামত প্রচার করার স্বপ্ন দেখিবার বেলা হয়তো সে অবাস্তব, অসম্ভব কল্পনার ক্রীতদাস,-কিন্তু তাও যেন ইচ্ছাকৃত দুর্বলতা, জানিয়া বুঝিয়া নিজেকে একটু খেয়াল খেলার সুযোগ দেওয়া । অথবা মোটের উপর মানুষটা আসলে পাগল ? NKDO