পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনহলতলী একবার আসিয়া জিজ্ঞাসাও করে নাই, তার বোনটিকে সঙ্গে করিয়া বংশোদার ভাই কোথায় গিয়াছে, এ খবরটা কি সে রাখে ? হয়তো জ্যোতিৰ্ম্ময় পুলিশে খবর দিয়াছে, হয়তে চারিদিকে খোজ করাইতেছে, দু’জনের সন্ধান পাইলেই নন্দকে জেলে পাঠাইয়া ছাড়িবে । সুবর্ণের সম্বন্ধে কি ব্যবস্থা করিবে সেই জানে। হয়তো দূরে কোন আত্মীয়ের কাছে পাঠাইয়া দিবে, হয়তো কোন বোর্ডিং-এ রাখিয়া লেখাপড়া শিখাইবে, হয়তো মেয়ের এই কীৰ্ত্তিকথা গোপন করিয়া চুপি চুপি কারও সঙ্গে বিবাহ দিবে।--তারপর যা হবার তোক । এসব কথাই যশোদা আজি ক'দিন ধরিয়া ভাবিতেছে । নিজেকে যে অনেকবার বলিয়াছে যে, নন্দ জেলে যাক, চুলোয় যাক, যমালয়ে যাক তার কিছু আসিয়া যায় না। ও নচ্ছরটার সঙ্গে আর তার কোন সম্পর্কই নাই। তবু মাঝে মাঝে যশোদার মনে প্রশ্ন জাগিয়াছে, এক নন্দই কি দোষী ? এই কেলেঙ্কারির জন্য সুবর্ণের কি কোন দোষ নাহি ? সুবৰ্ণ ছেলেমানুষ কিন্তু আমন ভাবপ্রবণ, ফাজিল আর পাকা মেয়েকে ভুলাহিয়া চুপ করিয়া পালানোর সাহস কি নন্দের হওয়া সম্ভব ? কাচপোকার আসোলাকে টানিয়া নিয়া যাওয়ার মত সুবৰ্ণ হ নন্দকে টানিয়া নিয়া গিয়াছে, দোষটা চাপিয়ে এক। নন্দের ঘাড়ে । ফিরিয়া আসিলে দু’জনের বিবাহ দিয়া দেওয়া যায় না ? জ্যোতিৰ্ম্ময়ের কাছে গিয়া কথাটা আগে হইতে আলোচনা করিয়া আসিলে হয়তো সে ভাবিয়া চিন্তিয়া রাজী হইয়া যাহতেও পারে । এ বিবাহ অবশ্য সুখের হইবে না, কিন্তু এই কুৎসিত ব্যাপারের জের টানিয়া চলােৱ চেয়ে সে সুখের অভাবও অনেক ভাল । ܓܠ