পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সনছ-৩লী হয়তো এমনিভাবে কোথায় কার বাড়ীতে একটি ঘর ভাড়া নিয়া তারা আছে, পয়সার টানাটানির জন্যই হয়তো তাদেরও প্রথম ঝগড়া বাধিয়াছে এমনিভাবে ৷ প্ৰথম বয়সের উত্তেজনায় দুঃখকে বরণ করায় সুখ দু’দিনে ঘুচিয়া গিয়া দুৰ্দশার দুজনের সীমা থাকিবে না, এই কথাই সর্বদা সে ভাবে, কিন্তু আসলে হয়তো এদের মতই দুলভ আনন্দে দিনগুলি তাদেরও ভরিয়া আছে । ভাবিতে গিয়া সংশয় জাগে যশোদার । সুবৰ্ণ তো সুব্রতার মত নয় । সুব্রতার গিন্নিপণ আছে পাকামি নাই, লজ্জাহীনতা আছে দেহায়াপনা নাই, বুদ্ধি আছে কুটিলতা নাই, চপল হাসি মন ভুলানোবা অস্ত্ৰ নয়। সুব্রতাব । সুব্রতার মত সুবর্ণ কি কাউকে আপন করিতে পারে, সুত্র তার মত মনেল মিল কি সুবর্ণের সঙ্গেও কারো হয় ? অজিতের চা খাওয়া দেখিতে দেখিতে যশোদাবি মনে হয়, কে জানে নন্দও তো অজিতের মত নয় । এদের দু’জনের মত নয়। বলিয়াই হয়তো ওদের মধ্যে এদের মত মিল হইয়াছে । যশোদার গম্ভীর মুখ দেখিয়া অজিত আর সুব্রতা ভাবে, তাদের চুড়ি বিক্রীর কথাটাই সে ভাবিতেছে। দু’জনেই যশোদার দিকে তাকায় আর চোখ নামাইয়া নেয়, তারপর প্রায় একসঙ্গেই পরস্পরের দিকে মুখ ফিরানোর ফলে যেই চোখোচোখি হয়, দু’জনের মুখেই মৃদু হাসি ফুটিয়া ওঠে। যশোদার প্রকাণ্ড শরীরটা আজও তাদের চোখে অভ্যস্ত হইয়া যায় নাই, এখনো বিস্ময় আর কৌতুক জাগে । इनि দৈখিয়া যশোদা বলে, “বড় ছেলেমানুষ তোমরা ।” দু’জনে ভাবে, এ বুঝি যশোদার শরীর দেখিয়া হাসার জন্য তিরস্কার । 8o