পাতা:সাবাইস বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাবাইস বুদ্ধি।

কয়েক ছড়া মতির মালাও তাহাকে দেখাইলাম। দেখিয়া দেখিয়া তিনি উহার মধ্য হইতে একজোড়া বলয় ও এক ছড়া মালা পছন্দ করিলেন। সেই সঙ্গে দুইটা হীরার ও একটী মাণিকের আংটীও তাঁহার পছন্দ হইল। তিনি ঐ সমস্ত দ্রব্যের মূল্য আমাকে জিজ্ঞাসা করিলে আমি কহিলাম, উহার মূল্য পনর সহস্র টাকা হইবে। ঐ সকল দ্রব্যের প্রকৃতমূল্য দশ হাজার টাকা; কিন্তু তাহার সহিত অনেক কসা মাজা করিয়া বার হাজার টাকা উহার মূল্য অবধারিত হইল। তখন তিনি তাঁহার পকেট হইতে একটা রূপার কার্ডকেস বাহির করিয়া তাহার মধ্য হইতে একখানি কার্ড বাহির করিয়া আমার হস্তে অর্পণ করিলেন। কার্ডে যে নাম মুদ্রিত ছিল, তাহা দেখিয়া আমি বুঝিলাম যে, উনি কলিকাতা হাইকোর্টের একজন বিখ্যাত কৌন্সলির স্ত্রী। বার হাজার কেন, সেই কৌন্সলি সাহেব যদি বিশ হাজার টাকার অলঙ্কার দেনায় চাহেন, তাহা আমি অনায়াসেই দিতে পারি।

 ঐ স্ত্রীলোকের পরিচয় পাইয়া আমি কহিলাম, “এই অলঙ্কার গুলি কি আপনি নিজে লইয়া যাইবেন, কি আমি উহা আপনার বাড়ীতে পাঠাইয়া দিব।” আরও জিজ্ঞাসা করিলাম, “ইহার মূল্য এখন আপনি প্রদান করিবেন, না বাকী থাকিবে, পরে ইহার বিল পাঠাইয়া দিব।”

 “ইহার মূল্য আপনি নগদ পাইবেন, কিন্তু এত টাকার অলঙ্কার আমার স্বামীকে একবার না দেখাইয়া লওয়া কর্তব্য নহে, অদ্যই রাত্রির গাড়ীতে কোন একটী মোকদ্দমা উপলক্ষে তাঁহাকে বাহিরে যাইতে হইবে। তিনি তাঁহার নিমিত্ত একটু ব্যস্ত আছেন বলিয়া, আমার সহিত আসিতে পারিলেন না।