ইহাই হইল উনবিংশ শতাব্দীতে মহিলা-সম্পাদিত পত্র-পত্রিকার তালিকা। সংখ্যায় এগুলি অপেক্ষাকৃত কম বলিয়া অনেকটা বিস্তৃতভাবে পরিচয় দেওয়া সম্ভব হইল। প্রধানত পুরুষ-পরিচালিত পত্রিকাগুলির আর্দশে গঠিত হইলেও নারীকণ্ঠে নারীসমাজের অভাব-অভিযোগ ও কর্তব্যের কথা এগুলিতে ধ্বনিত হইতে থাকে। এই পত্রিকাগুলিকে ভিত্তি করিয়াই পরবর্তী কালে বঙ্গমহিলাকুলের বক্তব্য পরিস্ফুট হইয়া উঠে।
২
বিংশ শতাব্দীর গোড়া (ইং ১৯০১) হইতে আজ পর্যন্ত পুরুষ-পরিচালিত পত্র-পত্রিকার সঙ্গে মহিলা-পরিচালিত পত্র-পত্রিকার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাইয়াছে। বর্তমান শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত পত্র-পত্রিকার তেমন সংখ্যাবাহুল্য ছিল না। এই সময়কার পত্রিকাগুলির পরিচয় দিতেছি—
মুকুল। ১৩০২ সালের আষাঢ় মাসে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের অন্তর্গত রবিবাসরীয় নীতি বিদ্যালয়ের উদ্যোগে ‘মুকুল’ নামে বালক-বালিকাদের উপযোগী একখানি সচিত্র মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ইহার প্রথম সম্পাদক শিবনাথ শাস্ত্রী। ষষ্ঠ বর্ষের (১৩০৭ সাল) ‘মুকুল’ সম্পাদন করেন শাস্ত্রী মহাশয়ের কন্যা হেমলতা দেবী। চব্বিশ বৎসর চলিয়া ‘মুকুলে’র প্রচার রহিত হয়; বেঙ্গল লাইব্রেরির তালিকায় ইহার ২৩শ বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, চৈত্র ১৩২৪ (প্রকাশকাল মে ১৯১৮) হইতে ২৪শ বর্ষ, ২য় সংখ্যা, জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬। (প্রকাশকাল জুলাই ১৯১৯) পর্যন্ত সম্পাদিকা-হিসাবে লাবণ্যপ্রভা সরকারের নাম পাওয়া যাইতেছে। ১৩৩৫ সালের বৈশাখ মাসে ইহার নব পর্যায় প্রকাশিত হয়; সম্পাদিকা শকুন্তলা দেবী। ৩য় বর্ষ হইতে বাসন্তী চক্রবর্তী সম্পাদন-ভার গ্রহণ করেন; তিনি ১৩৪৮ সাল পর্যন্ত ‘মুকুল’ পরিচালনা করিয়াছিলেন।
ভারত-মহিলা। ১৩১২ সালের ভাদ্র মাসে হেমেন্দ্রনাথ দত্তের সহধর্মিণী সরযূবালা দত্তের সম্পাদনায় ‘ভারত-মহিলা’ নামে মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত