বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সাময়িকপত্র-সম্পাদনে বঙ্গনারী.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R সাময়িকপত্র-সম্পাদনে বঙ্গনারী বঙ্গদেশের সকল শ্রেণী সত্ৰীলোকদিগের মখস্বরপ হইবে। সদ্ৰীলোকদিগের সর্বত্ব প্রভৃতির সমর্থন করা ইহার উদ্দেশ্য। স্ত্রীলোকের সম্পাদিত সংবাদপত্র এ দেশে এই নাতন প্রকাশিত হইল। আমরা হািদয়ের সহিত ইহার পোষকতা করিতেছি। এবং আশা করি যে, কয়েক সংখ্যা পত্রিকাতে যেমন সত্ৰীজনোচিত শান্ত ভাব প্রকাশ পাইতেছে, চিরকালই সেইরূপ দেখিতে পাইব । সম্পাদিকা যদি অন্যচিত বিজাতীয় অনাকরণে ব্যগ্র না হইয়া আমাদের বাস্তবিক অবস্থা বঝিয়া ও সমচিত সত্বাধীনতা রক্ষা করিয়া প্ৰস্তাব সকল প্রকাটিত করেন, এখানি ভদ্রসমাজে অত্যন্ত আদরণীয় হইবে।” রচনার নিদর্শনস্বরপ প্রথম সংখ্যা “বঙ্গমহিলায় প্রকাশিত ‘স্বাধীনতা” নামে প্রবন্ধটি উদ্ধত করিতেছি : “প্ৰকৃত সবাধীনতা কি ? বোধ করি, এ কথা নব্য সম্প্রদায়ের অনেকে বঝেন না, তাঁহারা স্বেচ্ছাচারিতাকেই স্বাধীনতা মনে করিয়া থাকেন। বৎগমহিলারা যথার্থ স্বাধীনতা ভোগ করিতেছেন, কিন্তু কেহ কেহ তাহা পরাধীনতা জ্ঞান করিয়া সত্ৰীজাতিকে স্বাধীনতা প্ৰদান করা উচিত বলিয়া যে সকল ব্যক্তি প্রদর্শন করেন, আমরা তাহা অনমোদন করিতে পারি না। ইউরোপীয় কামিনীগণের য্যেরােপ স্বাধীনতা আছে, বঙ্গীয় সত্ৰীলোকদিগকে ঠিক সেইরােপ স্বাধীনতা দিতে এদেশীয় কতকগালিন লোকের বড় ইচ্ছা হইয়াছে। কিন্তু বঙ্গমহিলাদের সে ইচ্ছা! নাই। ইউরোপীয় ও আমেরিকান সত্ৰীজাতির যেরপে স্বাধীনতা দেখা যায়, তাহাকে আমরা স্বেচ্ছাচারিতা বলিয়া থাকি। সন্ত্রীলোকে মনে করিলেই যে ঘোড়া চড়িয়া উড়িয়া যায়, ইচ্ছামতে পরপর ষের সহিত হাস্যকৌতুক অথবা নত্যাদি করে, লড়াজাহীনার ন্যায় পরিষদের সঙ্গে গান ও আহার করে, যখন তখন ভিন্ন পরিষের হাত ধরিয়া যথা তথা বেড়াইয়া বেড়ায়, এমন সত্ৰীলোকদিগকে কি বলা যায় ? তাহাদিগকে মেয়ে বলিতে তো আমাদের সাহস কুলায় না। নমতা এবং লতাজাশীলতাই সত্ৰীলোকদের প্রধান গণ। যে সকল সত্ৰী লঙ্কজা পরিত্যাগপৰ্ব্ববাক নমতাকে দরে নিক্ষেপ করিয়া বীরবেশে দেশ বিদেশে অশ্ববারোহণে ভ্ৰমণ করে তাহারা কি সস্ত্রী ? না বীর ? নারীজাতির এই সকল কায্য কি ভদ্রোচিত ? না সভ্যোচিত ? অথবা তা স্বাধীনতার ফল? এরােপ স্বাধীনতা যে বঙ্গস্ত্রীর প্রকৃতিবিরদ্ধে, দেশীয় খcীন্টিয়ান রমণীগণই তাহার প্রমাণস্থান। তাঁহারা ইউরোপীয় কামিনীদের ন্যায় স্বাধীনতা লাভে লোলপি হইয়াছেন বটে, কিন্তু প্রকৃতির প্রতিকােলাচরণে এ পৰ্য্যন্তও সমাকরিপে কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। তাঁহাদের মখভঙ্গিমা ও সলঙ্গজভাব অবলোকন করিলেই পাট প্রতীয়মান হয়, যেন তাঁহারা উত্তরােপ স্বাধীনতালাভার্থে সব সব প্রকৃতির উপরে বল প্রকাশ করিতেছেন।