পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার্বজনীন SSسيا সুরজন যে তাকে চায় এই চাওয়াটাই আসল কথা প্ৰধান কথা নয় সুরঞ্জনের কাছে। তার প্ল্যান করা জীবনের একটা অঙ্গ হিসাবে পদ্মাকে তার প্রয়োজন, তাই তাকে পাওয়ার জন্য তার এত আগ্রহ। চাকরীটা যেমন প্রয়োজন ছিল সেও তেমনি আরেকটা প্রয়োজন-- হয় তো তুলনায় ছোট প্রয়োজন । নিজেকে এক মনে হয়। পদ্মার। ধরা-বাধা নিয়মে যন্ত্রের মত তার সঙ্গে মিলুক মিশুক, বন্ধুত্ব করুক, স্নেহ আর দরদ দেখাক, প্ৰেম দিয়ে জয় করতে চাক, সবাই যেন আসলে নিজেকে নিয়ে বিব্রত, নিজের চিন্তা নিয়েই মশগুল । সত্যিকারের আপন মানুষ তার কেউ নেই। এই চিন্তা এই অনুভূতি জোরালো হওয়ার সঙ্গে ক্ষোভ আর বিতৃষ্ণা দিন দিন বেড়ে চলেছে পদ্মার। পরমেশ্বরের উপরেই তার গায়ের জ্বালাটা সব চেয়ে বেশী। সর্বদা তার মনে হয় যে এই মানুষটা তাকে হালকা প্ৰকৃতির ছ্যাবলা মেয়ে ভাবে, তার সেদিনকার দুপুরবেলার কীৰ্ত্তি স্মরণে এলে মনে মনে হাসে। অথচ, আশ্চৰ্য্য এই, অন্যদের সঙ্গ অস্বস্তিকর লাগলেও, সকলকে এড়িয়ে চলবার সাধ জাগলেও, পরমেশ্বর তাকে আকর্ষণ করে। আকর্ষণটা হয় দু'রকমের । কখনো সাধ হয় গিয়ে নিজের কথা ব্যবহার চালচলন দিয়ে পরমেশ্বরের ধারণাটা বদলে দেবে যে সে মোটেই হাল্কা ফাজিল মেয়ে নয় । আবার কখনো সাধ যায়, গিয়ে তর্ক করবে, ঝগড়া করবে: পরমেশ্বরের সঙ্গে । ব্যঙ্গ করে খোচা দিয়ে তীব্র অবজ্ঞা আর অশ্ৰদ্ধা দেখিয়ে পরমেশ্বরকে ভাল করে বুঝিয়ে দেবে সে কি রকম কুসংস্কারাচ্ছন্ন সেকেলে মানুষ, আজকের দিনে কত তুচ্ছ আর হাস্যকর হয়ে গেছে। তার মত মানুষের ।