পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S¢ዓ সাৰ্বজনীন রকমারিতে সুগন্ধ তার কাছে দাঁড়ায় কোথায়। ফুল, চন্দন, ধূপ, এসেন্স সব গন্ধই প্ৰায় একরকম, একঘেয়ে। ঘাটের এই দুৰ্গন্ধটা অদ্ভুত রকমের নতুন, আগে যেন কখনো শোকে নি। জীবনে। গা-টা কেনন। ঘিন ঘিন করে ওঠে, দম, আটকানো অস্বস্তি জাগে । এ ভাবটাই যেন মনে পড়িয়ে দিতে চায় গন্ধটাকে তার। আরও একবার কি চেনা হয়েছিলো তার এই বীভৎস ভারি গন্ধটার সঙ্গে ? তাই বটে, ঠিক ! মন্বন্তরের সময় একদিন সহরতলীর ষ্টেসনের দিকে হেঁটে যাবার সময় ঝাঁটার শলার গরম ঝাপটার মত দুৰ্গন্ধটা তার নাকে লেগেছিল । চেয়ে দেখেছিল পথের ধারে গাছতলায় ফোন মাখা মগটা আঁকড়ে ধরে একটা প্ৰায় পচা গলা দেহ পড়ে আছে মানুষের । ভাল করে তাকিয়ে জিতু বুঝতে পারে তালের গুড়ির কাছেই কিছু একটা ভাসছে। অৰ্দ্ধেক স্থলে, অৰ্দ্ধেক জলে। এটাও দেহ টের পেতে দেরী হয় না। চমক দেওয়া রাশভারি দুৰ্গন্ধটাও যে ওটা থেকে আসছে অনুমান করে নেওয়া যায়। কষা দাঁতনটা চিবোতে চিবােতে অনিচ্ছুক পদে ফিরে গিয়ে জিতু তার টর্চটা নিয়ে আসে। আলো ফেলে দেহের মুখটা দেখে বলে, রাম রাম! খাণিকক্ষণ সে অভিভূত হয়ে দাড়িয়ে থাকে। ; তোর শেষে এই গতি হল ছুড়ি ? জিতু নিজেকে শুনিয়ে বলে। সবার চেনা সেই পাগলী মেয়েটা। পনের ষোল বছরের বেশী বয়স হবে। না, হাতপাগুলি কাঠির মত সরু। কোথা থেকে এসেছিল। কেউ জানে