পাতা:সার্বজনীন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(Y সাৰ্বজনীন এ দু’দিন নিজেদের সঙ্গে সে সবিতাদেরও বাইরের কতগুলি প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করেছে। বাজার করেছে, দোকান থেকে জিনিষ এনে দিয়েছে, রেশন কার্ডের জন্য দরখাস্ত দাখিল করে এসেছে। জিজ্ঞাসা করেছে, হেড অব দি ফ্যামিলির নাম কি লিখব।-- পঙ্কজ হেসে বলেছে, কেন, গণেশ চন্দ্ৰ লিখবে। গণেশ হিসাবে এখানে পৌছে বেশ বদল করে নিজের পরিচয় দিলে সবিতা নিশ্চয় ইতিমধ্যে লজ্জা কাটিয়ে উঠত। ট্রেণে গণেশ হিসাবে তাকে একটু আরাম দিতে চেয়ে কাছে টেনে আনতে যাওয়ার যেভাবে পঙ্কজের কাছে তার পরিচয় ফাস হয়ে গিয়েছিল, সেটা বোধ হয়। সে এখনো ভুলতে পারে নি। পঙ্কজের পরিহাসে আবার তার মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে শক্ত মেয়ে। তবু হাসবার চেষ্টা করে বলেছে, দুটাে কার্ড হয় না ? একটা গণেশ নামে, আর একটা সবিতা নামে ?

হয় বৈকি ! এনকোয়ারি করতে এলে গণেশ সেজে সামনে গেলেই হল !

সাধন দরখাস্ত দিয়ে এলেও রেশন কার্ড জুটিয়ে আনার হাঙ্গামা করারু দায়িত্বটা সমীর যেচে নিয়েছে। সাধনকে বলেছে, আমি সব ঠিক করে দেব, ভাববেন না। পঙ্কজ উপস্থিত ছিল। সে বলেছে, আপনার তো আপিস আছে। অসুবিধা হবে। আমি ব্যবস্থা করে দেব । সমীর বলেছে, না না, অনুবিধা কিছু নেই। শুধু রেশন কার্ড যোগার করার দায়িত্ব নয়, সাধনকে কিছু না বললেও দৈনিক বাজারের ভারটাও সে যেচে গ্ৰহণ করেছে।