হে প্রিয় এসে দেখা দাও, তুমি বিনা যে আর থাক্তে পারি না, জল বিনা যেমন কমল, চন্দ্রহীন যেমন রাত্রি, হে প্রিয় তোমা বিনা আমারও যে সেই অবস্থা।
হরির বিরহে উন্মাদিনী মীরার আকুল প্রার্থনা আজও লক্ষ লক্ষ নরনারীর পথের পাথেয়, সেদিন মীরার কণ্ঠের গান যারা শুনেছিল তাদের সৌভাগ্যের তুলনা নেই!
বহু সাধনায় অবশেষে তাঁর সিদ্ধি এল, মীরা অন্তরের মধ্যে ‘হরি আওয়ন কি আওয়াজ’ শুন্তে পেলেন। নিশীথ রাত্রে ‘শ্যামল বনে’ তাঁর ‘শ্যামলের বাঁশি’ শুনে মীরা গৃহত্যাগ করলেন। তারপর দীর্ঘজীবন তাঁর কেটেছে পথে, আশ্রমে, মন্দিরে—বৃন্দাবনে, দ্বারকায়। নিজের ব’লতে তিনি কিছুই রাখেন নি, ঈশ্বরপ্রেমে ঐশ্বর্য, লোক-লজ্জা, গৃহসুখ সবই তিনি ছেড়েছিলেন। তাঁর প্রিয়তমের সেবায় যে আনন্দ তিনি পেয়েছিলেন, তাঁর গানগুলি আজও তার সাক্ষ্য দিচ্ছে:
তাঁর ‘মহারো’ জনম মরণ কি সাথী, তাকে নহিঁ বিসরূ দিনরাতী।
তুম দেখ্যা বিন কলন পরত হ্যায়, জানত মেরী ছাতি’।
আমার জন্ম-মরণের সাথী, তোমাকে দিনে রাত্রে কখনও ভুলব। আমার হৃদয় জানে তোমাকে না দেখ্লে সময় কাটে না।
“মহাঁনে চাকর রাখো জী”—প্রভু আমায় চাকর রাখো।
“জো তুম তোড়ে৷ পিয়া ম্যাঁয় নেহি তোড়ু”
প্রিয় তুমি এ বাঁধান ছিঁড়তে হয় ছেঁড়ো, আমি ছিঁড়ব না। “চিতনন্দন আগে নাচুঁংগী”—চিতনন্দনের সাম্নে আমি নাচব। “মেরে তো গিরধর গোপাল দুসরা ন কোঈ”—আমার তো আছেন শুধু গিরিধারী গোপাল, আর কেউ নেই।