পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
৯৩

 প্রত্যেক পরীই নিজের প্রেমিকের প্রতি বিমুখ। নিশ্চয় জেনো, জীবনরূপ ফল কেউ পূর্ণরূপে আস্বাদন করে না। অর্থাৎ নশ্বর জীবনে যেটুকু পারো সুখভোগ ক’রে নাও।

 গুলবদনের নিজের একটি গ্রন্থাগার ছিল, তার জন্য নানা স্থান থেকে তিনি অনেক বই সংগ্রহ করেছিলেন। আকবরের সময়ে শাহ্‌জাদীদের আলাদা পড়বার ঘর ঠিক থাকতো, ফতেপুরশিক্রীতেও এই বালিকা-বিদ্যালয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান ছিল। সম্রাট আকবরের সময়ে তাঁর অন্তঃপুরে সব চেয়ে বিদুষী এবং বুদ্ধিমতী নারী ছিলেন তাঁর পিস্‌তুতো বোন এবং পত্নী সলীমা সুলতানা বেগম। অপুত্রকা সলীমা সপত্নীপুত্র সলীমকে নিজ সন্তানের মত ভালো বাসতেন, সলীম পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ক’রলে তিনি নিজে এলাহাবাদে গিয়ে তাঁকে সুপরামর্শ দেন এবং আকবরের কাছে ফিরিয়ে আনেন। সলীমা বহু বিচিত্র বিষয়ের বই সংগ্রহ ক’রেছিলেন এবং পড়েছিলেন।

 সম্রাট আকবরের ধাত্রী ‘মাহম্ আন্‌গা’ এই যুগের একজন বিখ্যাতা বিদুষী ছিলেন। শিক্ষাবিস্তারের জন্য তিনি দিল্লীতে নিজের নামে একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন, সেই বিদ্যায়তন দীর্ঘকাল বহু দরিদ্রকে বিদ্যাদান ক’রে তাঁর নাম স্মরণীয় করেছে। পরবর্তী সম্রাট জাহান্‌গীরের পত্নী নুরজাহান শুধুই অলোকসামান্যা রূপবতী এবং বীর্য্যবতী শাসনকর্ত্রী ছিলেন না, সুকবি এবং কাব্যের পৃষ্ঠপোষিকারূপে তাঁর নাম অমর হ’য়ে রয়েছে। তার সব চেয়ে বিখ্যাত কবিতা লাহোরে তাঁর সমাধি-গাত্রে ক্ষোদিত আছে: