বিজয় করেছিলেন, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নেই। জীবিতকালে রামীকে চণ্ডীদাসের আত্মীয়েরা বিশেষ প্রীতির চোখে দেখেন নি, তাঁর রচিত পদ বাঁচিয়ে রাখার উপযুক্ত সশ্রদ্ধ মনোভাব সে যুগে কম লোকেরই ছিল। তাঁর কয়েকটি পদ থেকে দু’এক ছত্র ক’রে উদাহরণ দে’ব। চণ্ডীদাসের অদর্শনের দুঃখ জানাবার জন্য তিনি বলছেন:
“তুমি দিবা ভাগে লীলা অনুরাগে
ভ্রম সদা বনে বনে।
তাহে তব মুখ না দেখিয়া দুখ
পাই বহু ক্ষণে ক্ষণে॥…
তুমি সে আমার আমি সে তোমার,
সুহৃৎ কে’ আছে আর?
খেদে রামী কয় চণ্ডীদাস বিনা
জগৎ দেখি আঁধার।”
প্রবাদ আছে, নবাবের বেগম চণ্ডীদাসের গান শুনে, তাঁর অনুরক্তা হন, সেই সংবাদ পেয়ে নবাব তাঁকে হত্যা করেন। চণ্ডীদাসের মৃত্যু সময় রচিত রামীর কবিতার কয়েক ছত্র উদ্ধৃত করছি:
“নাথ, আমি যে রজকবালা।
আমার বচন না শুনে রাজন, বুঝিনু কৃষ্ণের লীলা॥
শুদ্ধ কলেবর হইল জর্জর দারুণ সঞ্চান ঘাতে।
এ দুখ দেখিয়া বিদরয়ে হিয়া, অভাগীরে লহ সাথে॥...
রাজা সে যবনজাতি, কি জানে রসের গতি,
চণ্ডীদাস করি ধ্যান, বেগম ত্যজিল প্রাণ।
শুনি ত্রস্তা ধরিনী ধায়, পড়িল বেগম পায়॥”