প্রভৃতি বিদুষীদের নাম আমরা এই সময়েই পাই। লোক-সাহিত্যের মধ্যে “ছেলে ঘুমোলা পাড়া জুড়োলো বর্গী এল দেশে, বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেবো কিসে।” প্রভৃতি আলীবর্দী খাঁর সময়ের বাংলায় বগীর অত্যাচারের স্মারক ছড়া নিঃসন্দেহে অষ্টাদশ শতাব্দীর রচিত। এই সমস্ত ছড়াগান যে ছেলের মায়েদেরই রচনা তা’তে সন্দেহ করবার কিছু নেই। আগডম্ বাগডম্ প্রভৃতির আগড়ম বাগড়ম অনেক কিছুই দজ্জাল ছেলেদের ভুলিয়ে রাখবার জন্য তাঁদের তৈরি করে নিতে হয়েছিল।[১]
“রামকুণ্ডু, সীতাকুণ্ডু, গিরি গোবর্ধন।
মধুর মধুর বংশী বাজে, এই তো বৃন্দাবন।”
নিঃসন্দেহ চৈতন্য দেবের সময়ে গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের নূতন ক’রে বৃন্দাবনে উপনিবেশ স্থাপনের চেষ্টার স্মারক। পলাসীর যুদ্ধের স্মারক একটি কবিতা একসময়ে খুব বিখ্যাত ছিল, তার এক অংশ এই:
“কি হোলোরে জান! পলাসীর ময়দানে নবাব হারাল পরাণ।…
ছোটো ছোটো তেলেঙ্গাগুলি লালকুর্ত্তি গায়,
হাঁটু গেড়ে মারছে তীর মীরমদনের গায়।
তীর পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে, গুলি পড়ে র’য়ে।
একলা মীরমদন সাহেব কত নেবে সয়ে?”…
এই ধরণের ঐতিহাসিক কবিতায় সিরাজউদ্দৌলার ক’লকাতা আক্রমণ, নন্দকুমারের ফাঁসি প্রভৃতির বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায়।
- ↑ অবশ্য ইদানীং “আগডম্ বাগডম্” আর ছেলে-ভুলানী ছড়া মাত্র নেই, ‘আগা-ডোম’, ‘বাগাডোম’দের সমর-সঙ্গীত বলে সনাক্ত হয়েছে।