পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
১৭৩

সেই রাজকন্যা কানাড়া—শুধু বীরনারী ছিলেন না, সুশিক্ষিতা এবং ধর্মপ্রাণা ছিলেন। আসামী ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার প্রভেদ খুবই অল্প, আসামী বিদুষীদের মধ্যে যাঁরা বাঙালী নন, তাঁদের মধ্যেও অধিকাংশই বাংলার সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবান্বিত। চৈতন্যের যুগে সার্বভৌম ভট্টাচার্যের স্ত্রী রাজা নরনারায়ণের সভায় পাণ্ডিত্যের জন্য খ্যাতি লাভ করেছিলেন। কথিত আছে, তিনি দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত রঘুনন্দনকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে বেদ এবং স্মৃতির বিচারে পরাস্ত ক’রে রাজার কাছে বৃত্তিলাভ করেছিলেন।

 ঊনবিংশ শতাব্দীতে পদ্মাবতী ফুকনানী প্রথম আসামী ভাষায় গল্প লিখে নাম করেন। তার পর যমুনেশ্বরী খাতোনিয়ার সুলেখিকা ব’লে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। মাত্র চব্বিশ বৎসর বয়সে তাঁর অকাল মৃত্যুতে আসামী সাহিত্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে আসামের সব চেয়ে বিখ্যাত লেখিকা নলিনীবালা দেবী এবং ধর্মেশ্বরী দেবী। নলিনীবালার লেখায় মধ্যযুগের বৈষ্ণব কবি এবং মরমীয়া সাধকদের প্রভাব খুব বেশী। ছোটো গল্প এবং উপন্যাস লিখে যাঁরা খ্যাতি লাভ করেছেন, তাঁদের মধ্যে স্নেহলতা ভট্টাচার্য এবং চন্দ্রপ্রভা সাইখিয়ার নাম উল্লেখযোগ্য।

 উত্তর ভারতের সর্বপ্রধান দু’টি ভাষার নাম করতে গেলে বাংলা এবং হিন্দীর নাম করতে হয়। হিন্দী সাহিত্যে নারীর দান বাংলার তুলনায় অল্প হ’লেও একেবারে নগণ্য নয়।

 মধ্যযুগের মারাঠী নারী-কবিদের মধ্যে দু’জনের নাম আমরা জানি; দু’জনেই সাধিকা এবং দু’জনেই মরমীয়া কবি। এঁদের মধ্যে প্রথম মুক্তাবাই ছিলেন ত্রয়োদশ শতাব্দীর সাধকপ্রবর