পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
১৮১

বর্ধনের সভায় নারী কবি ‘কান্তি’ খ্যাতি লাভ করেছিলেন। কানাড়ী রামায়ণের রচয়িতা নাগচন্দ্র বা ‘অভিনব পম্পা’ ছিলেন সে যুগের শ্রেষ্ঠ কবি, সভামধ্যে তাঁর বহু কবিতার পাদপূরণ ক’রে ‘কান্তি’ রাজসম্মান লাভ করেন। নাগচন্দ্রকে দেশবিদেশের লোক মহাকবি ব’লে স্বীকার করলেও কান্তি করতেন না, তিনি তাঁর সঙ্গে সমপদস্থের মতোই ব্যবহার করতেন। অবশেষে তাঁর কাছে প্রশংসা আদায়ের অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নাগচন্দ্র একদিন সহসা সভামধ্যে মৃত্যুর ভান ক’রে মাটিতে পড়ে গেলেন। চারিদিকে হাহাকার উঠল, কান্তি দয়াপরবশ হ’য়ে সেদিন নাগচন্দ্রের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ক’রে শ্লোক রচনা করলেন। নাগচন্দ্র বাজি জিতলেন, কান্তিকে অবাক্‌ করে দিয়ে সহসা তিনি বেঁচে উঠলেন। এমন অপ্রস্তুত কান্তি জীবনে কখনও হননি।

 প্রসিদ্ধ কানাড়ী বৈয়াকরণ নাগবর্মা দশম শতাব্দীতে তাঁর ‘ছন্দোম্বুধি’ গ্রন্থ স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনচ্ছলে রচনা করেছিলেন। একাদশ শতাব্দীর কানাড়ী জ্যোতির্বিদ ভাস্করাচার্যপত্নী (কোনমতে কন্যা) লীলাবতীর মত বৈয়াকরণ পত্নী উত্তর ভারতে খ্যাতি লাভ না ক’রলেও তাঁর ছন্দ এবং ব্যাকরণ সম্বন্ধে পাণ্ডিত্য অল্প ছিল না, ঐ বইখানিতে তার প্রমাণ আছে। সপ্তদশ শতাব্দীতে রাজা চিক্কদেব রায়ের রাণীর তাম্বুলকরঙ্কবাহিনী ‘হোন্নি’ বা ‘হোন্নাম্মা’ সুপণ্ডিতা ছিলেন; ‘নারীর কর্তব্য’ সম্বন্ধে তাঁর পাণ্ডিত্যপূর্ণ একটি গ্রন্থ আজও পাওয়া যায়।

 কর্ণাটকের বর্তমান যুগের লেখিকার মধ্যে কয়েকজন ইতিমধ্যে প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। আধুনিক কানাড়ী সাহিত্য যাঁদের রচনা দ্বারা সমৃদ্ধ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে নিম্নলিখিত