পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
১৮৯

তিনি শুধু নিজে বিদ্যাচর্চায় সন্তুষ্ট হ’তে পারেননি, অবরোধবাসিনী মুসলিম নারীগণের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের জন্য পরলোকগত স্বামীর নামে “সখাওয়াৎ মেমোরিয়েল” বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন ক’রে তার জন্য নিজের সম্পত্তি এবং জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। “পদ্মরাগ” নামক তাঁর আর একখানি পুস্তকও পাঠক-সমাজে আদৃত হয়েছিল। তা’ ছাড়া তাঁর আরও কতকগুলি পুস্তক আছে।

 এইখানে কয়েকজন আধুনিক মুসলিম লেখিকার নাম দিলাম। মুসলিম সমাজমধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করবার জন্য এবং হিন্দুমুসলমান দাঙ্গার দুর্দ্দিনে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রী বন্ধনের আলো জ্বালাবার জন্য বহু সুচিন্তিত প্রবন্ধ লিখে বেগম সোফিয়া খাতুন সমস্ত বাঙ্গালী জাতির শ্রদ্ধার পাত্রী হয়েছেন। বেগম শামসুন নাহার, সুফিয়া হুসেন, মাহ্‌মুদা সিদ্দিকা, নাজমা বেগম, জাহানারা বেগম চৌধুরী, এঁরা সকলেই সুলেখিকা। জাহানারা চৌধুরী কয়েক বৎসর ধ’রে একখানি সাহিত্য-বার্ষিকী সম্পাদন দ্বারা বহু হিন্দু মুসলিম লেখক-লেখিকাকে এক সাহিত্যিক সম্মিলন তীর্থক্ষেত্রে সমবেত ক’রে, সকলেরই ধন্যবাদের পাত্রী হয়েছিলেন। হিন্দু মুসলিম রাজনৈতিক প্যাক্টে’র মত স্বার্থময় বিষয়বস্তু নয়, এই নিঃস্বার্থ অসাম্প্রদায়িক পূজা-মণ্ডপই যথার্থ সর্বজাতির মিলনমন্দির, এই সত্য তাঁর তরুণচিত্তে প্রতিভাত হয়ে তাঁকে এই মহৎকার্যে প্ররোচিত করেছিল। সম্প্রতি হিন্দুমুসলিম মিলন উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকাশিত ‘গুলিস্তাঁ’ পত্রিকায় কয়েকজন লেখিকার নাম দেখা গেল, তাঁদের সুনাম বর্দ্ধিত হোক। লুৎফা সাহারুণ বেগম, জেবু আহমদ সাদদা বেগম প্রভৃতি।