পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

যেমন বেড়ে গেল, শক্তিও তেমনি ক’মে গেল দেখা যায়। মিসেস লিন্‌লিপ্টন, শার্লোটইয়ং, মারিয়া মলক, মিসেস অলিফ্যাণ্ট, এড্‌না লায়েল এবং মারীকরেলির নাম এই সমস্ত লেখিকাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। শার্লোট ইয়ং “রেডাক্লফের উত্তরাধিকারী”, “কীর্তি কথা”, প্রভৃতি যে সব বই লিখে বিখ্যাত হন, তার লাভের অধিকাংশ টাকাই ধর্মপ্রচারের সাহায্যের জন্য ব্যয় করতেন। “ডেজিফুলের মালা” লিখে তিনি ত্রিশ হাজার টাকা পেয়েছিলেন, সেই সমস্ত টাকা নিউজিল্যাণ্ডে এক মিশনারি কলেজ স্থাপন করতে খরচ হয়। তিনি মোট একশ’ কুড়িখানি গল্পের বই লেখেন, সব কটিরই যথেষ্ট বিক্রি ছিল সে সময়ে। মারিয়া মলকের বিখ্যাত বই “জনহালিফ্যাক্‌স্-ভদ্রলোক” তাঁকে স্মরণীয় ক’রে রাখবে। প্রবন্ধ এবং কবিতা লেখাতেও তাঁর দক্ষতা কম ছিল না। মিসেস অলিফ্যাণ্টের বহু গল্প উপন্যাস এক সময় ইংলণ্ডের সাময়িক পত্রকে সমৃদ্ধ করেছিল। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি পথে দাঁড়ান; তিন হাজার টাকার জীবন-বীমা এবং পনেরো হাজার টাকা দেনা রেখে তাঁর স্বামী মারা যান। কারো দয়া ভিক্ষা না করে শুধু নিজের লেখনীকে সম্বল করে তিনি এই বিপুল ঋণ শোধ করেছেন, সংসার চালিয়েছেন, সকলের প্রতি সব কর্তব্য করেছেন। তাঁর ভাষায় মাধুর্য ছিল। ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে লেখবার সুন্দর শক্তি ছিল। সাহিত্যের ক্ষেত্রে তাঁর নাম হয়তো চিরস্মরণীয় হবে না, কিন্তু মনুষ্যত্বের সম্মান যতদিন আছে ততদিন এই তেজস্বিনী নারী সমস্ত শিক্ষিতা মহিলার আদর্শ স্বরূপা হ’য়ে থাকবেন। মারী করেলি নামক লেখিকার (১৮৬৪-১৮২৪) “বারাব্বাস”,