পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৩৩

কুসাহিত্যিকের লেখা কল্পিত সহিত্য কু-চিত্র দিয়ে সমসাময়িক স্বদেশের এবং সজ্জন সমাজেরও মুখ কালো ক'রে দিতে পারে, শুধু আজকের জন্য নয়, চিরদিনের জন্যই তাকে কলঙ্কিত করতে পারে।

 বিভিন্ন দেশের সাহিত্যে যে সব নারী-চরিত্রগুলি আমরা দেখতে পাই, তার মধ্যে অধিকাংশই পুরুষের সৃষ্ট। কোথাও তাঁরা ঐতিহাসিক চরিত্রকে নিজেদের জ্ঞানবুদ্ধি ও রুচি অনুযায়ী নূতন করে ঢেলে সেজেছেন, কোথাও যতদূর সম্ভব বাস্তবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে চেষ্টা করেছেন। যে চরিত্রগুলি সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসুত সেগুলিতে সমসাময়িক সমাজ-চিত্র এবং লেখকের পছন্দ-অপছন্দ স্পষ্টই বোঝা যায়, কোনো চরিত্রে প্রথমটি কোনো চরিত্রে দ্বিতীয়টি বেশী ফুটেছে। বস্তুতান্ত্রিক লেখক যেখানে নির্মমভাবে তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে নারীর মনের আঁস্তাকুঁড় ঘেটেছেন, আদর্শবাদী লেখক হয়তো সেইখানেই সহৃদয় ভাবে সত্য সন্ধান করতে গিয়ে দেবমন্দিরের সন্ধান পেয়ে ধন্য হয়েছেন। এই দু'দলের মধ্যেই প্রতিভাশালী ব্যক্তি জন্মেছেন, তাঁদের প্রতিভার তারতম্য অনুসারে তাঁরা সমাজের হিত এবং অহিত দুইই করেছেন।

 সাহিত্যে নারী-চরিত্র সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা প্রথমেই দেখতে পাই অপ্রাকৃত এবং অতিপ্রাকৃত দেবী এবং অপদেবীর ভিড়। পৃথিবীর প্রাচীনতম সাহিত্যে যে সব কল্পলোকবাসিনীদের সন্ধান পাওয়া যায়, তাঁদের মধ্যে অনেকেই মানবী নন। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে কয়েক জন নিঃসন্দেহ বাস্তবলোকচারিণী ঐতিহাসিক ব্যক্তি হ'লেও কবি কল্পনা তাঁদেরও ওপর অবাস্তব মহিমার রং চড়িয়ে তাদের দেবী এবং অপদেবীদের

O.P. 92-30