পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৬
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

করেছিলেন। এরা প্রত্যেকেই ভিত্তিচিত্রে নিজেদের কিছু না কিছু কাহিনী লিখে রেখে গেছেন, তবে ঐ সব নারীদের কারো কারো পার্থিব দেহ পর্যন্ত আজকের দিনে আমরা পাচ্ছি, সুতরাং তাঁদের সাহিত্যের সৃষ্টি বলে ধরা চলে না। এঁদের বাদ দিলে যেসব পার্থিব নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, তাঁরা অনেকেই রূপকথার নায়িকা। সিনুহির ‘ভ্রমণবৃত্তান্তে’ ‘হতভাগ্য রাজপুত্রের নাহরিন রাজকন্যা লাভে'র গল্পে আরও অনেকের মধ্যে মাঝে মাঝে কবিকল্পনার অপরূপ সৃষ্টি দেখতে পাওয়া যায়।

 এই সব লিখিত সাহিত্য ছাড়া শিল্প-সাহিত্য সেদিনের মিশর নারীকে আমাদের কাছে সুপরিচিত করেছে, তাদের জীবনযাত্রার সহস্র উপকরণ, ভিত্তিচিত্রে, ভাস্কর্যে, ক্রীড়াপুত্তলিকায় তাঁদের বিচিত্র ভঙ্গীতে বহু সহস্র বৎসরের পুরাতনী নারীকে আমাদের আত্মীয় করে তুলেছে। চিত্রলিপির অনুশাসনে আজও আমরা সেদিনের নারীর সম্মানের,—মাতার সম্মানের আভাস পাচ্ছি;— “মায়ের আহার বিহার সম্বন্ধে যত্ন নিয়ো। ছোটোবেলায় মা তোমাকে সযত্নে মানুষ করেছেন, তুমিও তেমনি সযত্নে তাঁকে প্রতিপালন করবে। তিনি দশমাস তোমায় গর্ভে ধারণ করেছেন, তিন বৎসর স্তন্যসুধাপান করিয়েছেন, সে কথা ভুলো না। যৌবনে যখন সংসারী হবে, নিজে যখন পুত্রকন্যার পিতা হবে তখনও নিজের শৈশবের কথা মনে রেখো। মাতার প্রতি শ্রদ্ধাবান হওয়া প্রত্যেক সন্তানেরই কর্তব্য।”

 মিশরের পরেই ব্যাবিলন আসিরিয়ার স্থান। ব্যাবিলনে এক সময়ে অরুরু, ইথার প্রমুখ দেবীর পূজার বহুল প্রচলন ছিল। ঐ দেশে ‘গিলগামেস’ নামক মহাকাব্য রচিত হয়;