পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৪৭

তা'তে দেবী ইস্থারের কোপে পড়ে ‘ইরেক’ রাজ্যের রাজা গিলগামেশের যে দুর্গতি হয় তারই কাহিনী লিখিত আছে। দেবী “ইস্থার” সুপুরুষ গিলগামেসকে দেখে প্রেমে পড়েছিলেন, কিন্তু গিলগামেসের কাছে তার প্রার্থনা নিস্ফল হওয়ায় দেবীর শাপে গিলগামেস রূপযৌবন হারিয়ে পথের ফকির হলেন। শেষ পর্যন্ত সমুদ্রের রাণী “সবিতু” দেবীর দয়ায় শান্তিদ্বীপে গিয়ে পূর্বপুরুষ-প্রদত্ত মন্ত্রপূত অন্নাহার করে গিলগামেস রূপযৌবন ফিরে পেলেন এবং দেশে ফিরে দেবীকে পূজা-অর্চনায় সন্তুষ্ট করে সুখে স্বচ্ছন্দে রাজত্ব করতে লাগলেন। ‘ইস্থারে'র প্রণয়-পাত্রদের অনেককেই অনেক দুঃখ ভোগ করতে হয়েছিল, এই খামখেয়ালী কোপনা দেবীটিকে তুষ্ট করবার জন্য সেদিন অনেক ছন্দোবদ্ধ স্তবের উদ্ভব হয়েছিল, যার মধ্যে চাটুবাদের সঙ্গে সঙ্গে কবিত্বের অভাব নেই।

 এর পর আসে গ্রীকসাহিত্যের কথা। ট্রয়যুদ্ধের অনেক পরে— আনুমানিক আটাশ শ’বৎসরের আগে মহাকবি হোমার তাঁর অমর কাব্য ‘ইলিয়াড’ এবং ‘ওডিসিউস’ রচনা করেন। তার অনেক পূর্বেই গ্রীসের কল্পনারাজ্যে বহু দেবী দানবী বাসা বেঁধেছিলেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দেবরাজপত্নী ‘হীরা' প্রণয়দেবী ‘আফ্রোদিতে’, জ্ঞান এবং যুদ্ধের দেবী ‘আথেনা’ মৃগয়ার দেবী ‘আর্তিমিস’, ‘ভূমিদেবী ডিমিটার’, ঊষার দেবী ‘অরোরা' এবং গার্হপত্য অগ্নির দেবী ‘হেষ্টিয়া'। ‘হীরা’ চরিত্রহীন দেবরাজ 'জিউসে'র সদা-সন্দিগ্ধ-চিত্তা প্রতিহিংসাপরায়ণা পত্নী, জিউস যে সব দেবী এবং মানবীর সঙ্গে প্রেমে পড়েন, হীরা তাদের সঙ্গে ক্ষমাহীন সংগ্রাম ঘোষণা করেন। জিউস রাজহংসরূপে স্পার্টার