পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৫৯

পুরাণের দুটি বিখ্যাত চরিত্র ‘বাথসেবা এবং ‘সেবার রাণী'। ‘বাথসেবা’কে পাবার জন্য রাজা ডেভিড বিশ্বাসঘাতকতা ক'রে তাঁর স্বামীকে হত্যা করান। সেবার রাণী ডেভিডের পুত্র সলোমনের সঙ্গে দেখা করতে এসে স্বেচ্ছায় তাঁকে আত্মদান করেন। ইথিওপিয়ার রাজারা আজও সেবার রাণীর বংশধর বলে পরিচয় দেন এবং দিতে লজ্জিত হ'ন না।

 গ্রীক রোমানদের পর যে সব জাতি পাশ্চাত্ত্যজগতে প্রাধান্য লাভ করেছে তাদের অর্থাৎ ইংরাজ জার্মান প্রভৃতি জাতির মুল পুরাণকে নরওয়ের পুরাণ বলা চলে। তা’তে যেসব দেবী এবং মানবীদের দেখা পাই, তাদের মধ্যে স্বর্গের রাণী ‘ফ্রিয়া’ বা সৌন্দর্যদেবী ‘ফ্রিয়া’ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। তিনি তাঁর রণরঙ্গিনী সঙ্গিনী 'ভ্যালকি’দের নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেন এবং সম্মুখসমরে যে সব বীর প্রাণ দিত, তাদের নিজের সভায় নিয়ে এসে ‘হাইদ্রুন’ ছাগলের দুধ এবং ‘সেহ্রিমনি’ শূকরের অক্ষয় মাংস খাওয়াতেন। ফ্রিয়ার এক ছেলে আলোকদেবতা ‘বলডার’, আর এক ছেলে অন্ধকারের অন্ধদেবতা ‘হোডার'। হোডার খেলাচ্ছলে ‘মিসলটোর’ তীর ছুড়ে ভাইকে হত্যা করলে তাঁকে বাঁচাবার অনেক চেষ্টা হয়েছিল। অদৃষ্টদেবী ‘ভলা', মৃত্যুদেবী ‘হেলা’ প্রভৃতি নিষ্ঠুর প্রতিহিংসাপরায়ণা দেবীদের সঙ্গে এই সূত্রে আমাদের পরিচয় হয়। হেলা বললেন, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী যদি বল্ডারের জন্য কাঁদে, তবে তাকে ফিরিয়ে দেবেন, কিন্তু দানবী ‘থক্’ বা ছদ্মবেশী দেবতা ‘লোকি’ বল্ডারের জন্য কাঁদতে রাজি না হওয়ায় তিনি জীবন ফিরে পেলেন না। শেষে পৃথিবীদেবী ‘রিণ্ডা'র গর্ভে দেবরাজ ওডিনের ‘ভ্যানি’ নামক পুত্র জন্ম নিলে, সে অন্ধকারের