পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৬
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

“অতোঽসপত্নান্ জয়তে, সমূলেন বিনশ্যতি।”

 বালি-পরিবারেও প্রায় ইহারই অনুরূপ দৃশ্যই দেখা যায়, যথা;—বিতাড়িত কনিষ্ঠ ভ্রাতার পত্নী ‘রুমা’কে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা এবং বলবান্ রাজা গ্রহণ করেছেন, তাতেও লোকনিন্দা বা প্রজাদ্রোহ ঘটেনি! অপর পক্ষে সুগ্রীব রাজা হয়ে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃ-জায়া বিদুষী ও রাজ-নাতিজ্ঞা ‘তারা’কে তার পাটরাণী করাতেও রাজ্যের প্রজাবৃন্দ নির্বিচারেই সেই অনাচার মেনে নিয়েছে। এখানে স্পষ্টতঃ দেখা যাচ্ছে, সে দেশের ও সেই সমাজের সেইরূপই প্রথা ছিল।

 আজও ভারতের দক্ষিণ-পূর্বদিকে কোন কোন সমাজে এই প্রথা বর্তমান আছে। অথচ ঠিক সেই একই সময়ে লক্ষ্মণ ভ্রাতৃজায়া সীতা দেবীর চরণপদ্ম দর্শনে ধন্য হচ্ছেন, মুখ দর্শন করতেও কুণ্ঠানুভব করে থাকেন।

 পূর্বে বলেছি, কল্পিত-পারস্যের নারী তাদের কল্পিত-সর্বনাশের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে বাঁচলো একটা নারীর বুদ্ধিকৌশলে! এই জগৎ বিখ্যাত পুস্তকটী[১] প্রাচীন আরবের মরুবাসী মূর থেকে প্রাচীন ও নবীন ধর্মের সংমিশ্রিত ও আরব্য পারস্য সভ্যতার বহু চিত্র ও বিচিত্রতর তাদের পূর্বতন সমাজ, রাষ্ট্র, বাণিজ্য প্রভৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ‘পারস্য সুন্দরী' 'বেদৌরা', ‘আবুর পত্নী’ এবং আলিবাবার সুবিখ্যাত ‘মর্জিনা' 'ইবনেহোসেনে'র পত্নী খলিফা কন্যা রোসেনা প্রমুখ পতিপ্রাণা কূটবুদ্ধিশালিনী উচ্চাঙ্গের নারীদের দেখা ওর মধ্যে আমরা পাই, আবার অতি হীনচরিত্রারাও যে সে যুগে কিছু কম ছিলেন


  1. আরব্য উপন্যাস।