পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

এবং ঋষিগণ ধর্মের গুহ্যতম তত্ত্ব শুনে ধন্য হয়েছিলেন। এই যুগের আর একজন মহীয়সী এবং সুপণ্ডিত নারী কাশীরাজমহিষী মদালসা। তিনি উপযুক্ত তিনপুত্র— বিক্রান্ত, সুবাহু এবং শত্রুমর্দনকে নিজে ব্রহ্মবিদ্যা শিক্ষা দিয়ে বনবাসী সন্ন্যাসী করেন, শেষে স্বামীর অনুরোধে চতুর্থ পুত্র অলর্ককে রাজনীতি এবং যোগশাস্ত্র শিক্ষা দেন। কাশীরাজ অলক এই পুণ্যবতীর শিক্ষানুসারে যোগাভ্যাস দ্বারা রিপুসমূহ দমন করে কাশীতে ধর্মরাজ্য স্থাপন করেছিলেন। মহাভারতে ‘শিবা’ নাম্নী এক সিদ্ধা ব্রাহ্মণীর উল্লেখ আছে, তিনি সর্ববেদপারগা ছিলেন। শাণ্ডিল্য মুনির কন্যা কৌমার ব্রহ্মচারিণী ছিলেন। তিনি যোগযুক্ত। তপঃসিদ্ধ হয়েছিলেন এবং কঠোর তপস্যা ক'রে দেব-ব্রাহ্মণপূজিতা হ'য়ে স্বর্গে গেছলেন। কুনিগর্গ কন্যা, গৌতমী প্রভৃতি তপস্বিনীর কথা মহাভারতে পাওয়া যায়, তাঁরা প্রত্যেকেই সুপণ্ডিতা ছিলেন। ধ্রুবজননী সুনীতি তাঁর পিতৃগৃহে অপমানিত পুত্র ধ্রুবকে ধর্মের মধ্যেই সান্ত্বনা লাভ করতে শিখিয়েছিলেন। ধ্রুবের ভবিষ্যৎ মহত্ত্বের মূলে ছিল তার বিদুষী ধর্মপ্রাণ মা সুনীতির শিক্ষা। এই যুগের অন্যান্য বিদুষীর মধ্যে মহারাজ স্বায়ম্ভুব মনুর কন্যা দেবহুতি ঋষি-কর্দমের পাণ্ডিত্য খ্যাতি শুনে স্বেচ্ছায় তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। এই জ্ঞানতপস্বী দম্পতির পুত্র মহামনীষী মহর্ষি কপিল সাঙ্খ্য দর্শনের রচয়িতা বলে উত্তরকালে বিশ্ববিশ্রুত হয়েছেন, কিন্তু তার বিদুষী মা’ই যে তাঁকে শৈশবে মাতৃস্তন্যের সঙ্গে মননশীলতায় দীক্ষা দিয়েছিলেন, সে কথা অনেকেই জানেন না।

 মদ্ররাজকন্যা সাবিত্রী পিতার সঙ্গে, নারদের সঙ্গে, পতি