পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮০
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

বহু অধ্যায় প্রেম সাধনায় চির-বিজয়িণী ‘থির বিজুরি কাঁতি' ‘নমূঞা বদনী ধনি’, যিনি কথা কইলে মনে হয়;—‘অমিয় বরষে যেন শরদ পূর্ণিমা নিশি’,—যাঁকে ইক্ষণ করে সহস্র গোপিনীর প্রার্থিততম শ্যামচন্দ্র কবি বিদ্যাপতির মুখ দিয়ে বলেছেন;—

“যাঁহা যাঁহা পদযুগ ধরই, তাঁহি তাঁহি সরোরুহ ভরই,
যাঁহা যাঁহা ঝলকত অঙ্গ, তাঁহা তাঁহা বিজুরি তরঙ্গ।
কি হরন্স অপরূপ গোরি, পৈঠল হিয়া মাহ মোরি॥”

 তাঁকে উপলক্ষ করে রচিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের ত কথাই নেই; ব্রজবুলির কল্যাণে ভারতীয় সাহিত্যেরও ইনি অপূর্ব গৌরবোজ্জ্বল এক সম্পদ। সেই সর্বসমাদৃতা কিশোরী, কবি শিরোমণি চণ্ডীদাসের শ্রীরাধা ‘শ্যাম’ এই নামটুকুই গুরুমন্ত্রের মত যেন কার কাছ থেকে শুনতে পেয়েছেন,—সম্ভবতঃ মন্ত্রসিদ্ধ গুরুই তিনি হবেন, নতুবা মন্ত্রশক্তির এমন অব্যর্থ প্রভাব হয় কি করে? সখির গলা ধরে বলছেন।—

“সই কেবা শুনাইল শ্যাম নাম!
কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিল গো,
আকুল করিল মোর প্রাণ,
না জানি কতেক মধু শ্যাম নামে আছে গো,
বদন ছাড়িতে নাহি পারে,
জপিতে জপিতে নাম অবশ করিল গো,
কেমনে পাইব সই তারে?”

 আবার জল আন্‌তে গিয়ে চাক্ষুষ সাক্ষাৎ ঘটতেও বাকি রইল না। আর কি রক্ষা আছে! ব্যাকুল বিস্ময়ে জানাচ্ছেন;—