পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

‘‘শক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত মোরা অভয়চরণে নম্রশির
ডরিনে রক্ত ঝরিতে ঝরাতে দৃপ্ত আমরা ভক্তবীর।”

প্রভৃতি শক্তি সাধনার চরম মন্ত্রসমূহ বহু হোতা উদ্গাতার মুখ থেকে নিঃসৃত হয়ে, “মা মা” রবে বাঙ্গালীর জীবনে ভাঁটার পরে জোয়ারের মত প্লাবন এনে দিয়েছিল। বাংলাসাহিত্যে বাঙ্গালীর একান্ত নিজস্ব তন্ত্রসাধনা যুগযুগান্তরের বিস্মৃত অতীতকে ঠেলে ফেলে হঠাৎ নিজরূপ প্রকট করেছে। সাধনায় অমরত্ব লাভ না করলে, অকাল-মৃত্যুর অধিকারের বহির্ভূত না হলে কি মহামন্ত্রের—মাতৃমন্ত্রের সাধনায় সিদ্ধ হওয়া যায়? এবার আশা দেখা দিয়েছে, ঊষাও আর অদৃশ্যা নেই! মাতৃযাগের অনুষ্ঠানে একদা মাতৃমন্ত্রের ভৈরবনাদে ভারতের,—বিশেষ করেই বাংলার আকাশ কেঁপে উঠেছিল। ইতিপূর্বে এক মায়েরই সেবা করে এদেশ ষোড়শ মাতৃকার পালে পার্বণে পূজা পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত ছিল। আজ অকস্মাৎ স্কন্ধ-ধাত্রীদের মত ধাত্রী-মাতাস্বরূপা অপর মায়ের কথা জনে জনের মনে মনে লজ্জা-সঙ্ঘাত বাধিয়ে দিলে, বাহান্নপীঠের অধিষ্ঠাত্রীদের উদ্দেশ করে আসমুদ্রহিমাচল মাতৃনামে গর্জে উঠলো। নূতন নূতন মন্ত্রসাধকরা বুক চিতিয়ে এগিয়ে এলেন, হতাশার গান ছেড়ে দিয়ে বীর্যের গান শৌর্যের গান তাঁরা গাইতে লাগলেন, এঁরা বল্‌লেন;—

‘‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে,
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুঁসিয়ার।”

এঁরা গাইলেন—

‘ঊর্ধে গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণীতল