পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩২১

“তার শমনে ভয় কি, মা যার শ্যামা?
অন্তে যাব তাঁর ধামে বাজাইয়া দামা।”

 বর্দ্ধমানের মহারাজাধিরাজ মহতাবচন্দ্রের ভোগৈশ্বর্যের অভাব ছিল না, তবু যা’ নেই তারই জন্য মায়ের কাছে দরবার করতে ছাড়েননি;—“চন্দ্রে মোক্ষ প্রদায়িনী হওগো ভবাণী!”

 মহারাজ যতীন্দ্রমোহন বিষয়ী লোক, আইন-আদালতের খবরটা রাখেন ভাল, নালিশ জানাচ্ছেন;—

—“শিবের মাগো অবিচার ভারী।
মাতৃধনে ছেলেয় ফাঁকি, নিজেই হ’ন তার অধিকারী।”

 রাজা সৌরীন্দ্রমোহন বিশ্বেশ্বরী মায়ের পরিবর্ত্তে তদানীন্তন ভারতেশ্বরীকে রাজসিক উপাসনায় পূজা প্রদান ক’রে সকাম সাধনার চরম দেখিয়েছেন! যথা;—

“বিশাল তড়াগনীরে শোভে যথা কমলিনী,
অয়ি মাতঃ ভিক্টোরিয়া ইংলণ্ডে তুমি তেমনি।”

এই মাতৃভক্তদের মধ্য দিয়ে সহসা এক পার্থিবজননীর ভক্ত সমাগম হয়েছিল, কান্ত কবি রজনীকান্তের মতই।[১] তিনি রাজা মহিমারঞ্জন রায়, বিশ্বমাকে নয়, নিজের গর্ভধারিণী মাকে উদ্দেশ ক’রে তিনি শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন;—

“ও মা সাক্ষাৎ ঈশ্বরী, আমায় গর্ভে ধরি কত না যাতনা পেয়েছ,
এ প্রাণ থাকিতে, পারিনে ভুলিতে, কত যত্ন তুমি করেছ।”

 মাকে গর্ভে ধরার গুদামভাড়া দিয়ে চুকিয়ে দে’বার নীতি


  1. ‘‘স্নেহ বিহ্বল, করুণা ছলছল,
    শিয়রে জাগে কা’র আঁখিরে!’’ ইত্যাদি…