পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

“আমাদের কয় চিতা?
দেখ না অনন্ত চিতা ভারত মাতার বক্ষে,
পুড়ি এই চিতানলে অধর্ম তিমির রাশি,
নবধর্ম ঊষা ওই আনন্দে উঠিছে ভাসি।”

 অবশ্য তার ধর্মরাজ্য[১] ইত্যাদি নিশার স্বপনসম বর্তমান আটলাণ্টিক চার্টারের মতই রাজনৈতিকের কূটবুদ্ধির খেলামাত্র, তার জন্য সে নিশ্চয় দায়ী নয়।

 হেমচন্দ্রের ঐন্দ্রিলা ইন্দ্র-বিজয়ী স্পর্ধিত বৃত্রাসুরের অতিদর্পিতা পত্নী, যেমন আমরা সচরাচর ধনীগৃহে বিশেষতঃ নূতন বড়লোক হওয়া সাধারণ ঘরের মেয়েদের কাহারও কাহারও ঘরে দেখতে পাই। পুত্রবধু ইন্দুবালা ঠিক এর বিপরীত চিত্র। সুকুমারী ধর্মভীরু কিশোরী মেয়েটি মনের বুকে ছোট্ট একটী ছবি এঁকে রেখে দিয়েছে। ঐন্দ্রিলার ঈর্ষাদগ্ধ সদর্প উক্তি;—

“সত্যই কি তবে শচী এতই রূপসী?
আমার অঙ্গের বর্ণ তার অঙ্গে মসি!”

 রূপ-গরবিণীর আহতচিত্তেরই যোগ্য বিষোদ্‌গার!

 প্রমথনাথের “শুম্ভনিশুম্ভবধে” কিন্তু শুম্ভপত্নী শুভ্রা আমাদের পূর্বোল্লিখিত মতকে খণ্ডন করেছেন। রূপসী তরুণীরূপধারিণী মহাশক্তি মহামায়ার প্রতি প্রেমনিবেদন করতে গিয়ে দৈত্যপতি তাঁর সংসারে ও সমাজে যে দারুণ বিপ্লব ইচ্ছা সাধে ডেকে আনলেন সেই কথার উল্লেখ করে প্রবলপ্রতাপ স্বামীর প্রতি সমুচিত ভর্ৎসনাবাণী প্রয়োগ করতে তিনি কুণ্ঠিতা নন; তাঁদের পতি-পত্নীর আলোচনার ভিতর দিয়ে তা’ সুস্পষ্ট


  1. ৺মহাত্মাজীর রামরাজ্যের মতও বলা যায়।