পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

আমাদের মনে পড়িয়ে দেয় রবীন্দ্রনাথের সেই বিয়ের কনের “জীবনযৌবন ক্ষয় করে” তৃপ্তিসাধনের প্রস্তাবের উত্তর;—“আরো কুল পাড়ো গোটা ছয়।”

 নব্য-বন্যার নূতনস্রোতে ভাসমানা মেয়েদের নিয়ে তাঁর রঙ্গব্যঙ্গ সর্বত্রই যে অস্বাভাবিক হয়েছে তা’ কেউই বলবে না, কবির চিত্তে ভবিষ্যতের ছায়া পড়ে এ চিরন্তন সত্য কথা! “ফাটকে আর আটক রবো না।” এ ত মেয়েরা বলেইছে চিরদিন এবং আটক আর নেইও। “বিবাহবিভ্রাটে’’র বিলাসিনী কার্‌ফরমা সমাজে অদৃষ্টপূর্বা ন’ন। খাসদখলের বিধুঝির “বাবুকে বাঘে খাইয়াছে, পৃথিবী গোলাকার, মা দুঃখ করিবেন না।” সত্যই উপভোগ্য! শিক্ষিতা মহিলা মোক্ষদার;—“বিধুঝি, যে আমার চুল আঁচড়ে দেয়, ষ্টকিং পরিয়ে দেয়, তার যখন জ্বর হয় তখন ওঠে একশ চার, আর আমার কি না নাইনটি-নাইন!” অতি উপাদেয়। গিরিবালা চরিত্রটিতে চিরপুরাতনী নারীর সেই সনাতনী রূপ যার একান্ত অভাব ঘটলে পৃথিবী থাকলো বা গেল কিছুই এসে যাবে না! অমৃতলাল তাঁর ‘বাবু’, ‘বৌমা', ‘অবতার’ ‘কালাপানি’ প্রভৃতিতে বহু বিভিন্ন নারীচরিত্র সৃষ্টি করেছেন। “তরুবালা”র পারুলে এবং তরুবালায় মোহ এবং প্রেমের দুই পরস্পরবিরোধী ছবি সুন্দর রূপে ফুটেছে। ঠান্‌দি চরিত্রটী সত্যই সুন্দর। অমৃতলাল বহুবিধ হাস্য-সরস সঙ্গীতে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং অনেক দিক থেকেই অভাগা বাঙ্গালীর প্রাণে হাসি যুগিয়েছেন, অন্ততঃ কিছুক্ষণ সময়ের জন্যও। “ঠানদি, তোমায় সাজাব কনে”,“ও-মা গঙ্গা তোর রাঙ্গা পায়ে দে’ জননি স্থান”, “ইংরাজীতে এলে বি-এ, পাশ করেছেন