পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৭২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

করে ফিরিয়ে এনে বঁধতে পারবে না? “মা”কে পূজা-নিবেদন করে ভোগের প্রসাদ ত মায়ের সন্তানেরাই উপভোগ করে। দ্বিজেন্দ্রলালের “চন্দ্রগুপ্ত”, মেবারপতন”, “প্রতাপসিংহ”, “দুর্গাদাস”,“সিংহলবিজয়” নাটকে অর্থাৎ সমগ্র দ্বিজেন্দ্র-সাহিত্যে মাতৃপূজার যে মন্ত্র জীমূতমন্দ্রে বিঘোষিত হয়েছিল, তাঁর চারণগীতিবৎ অগ্নিগর্ভ সঙ্গীতসমূহ দেশের যে উপকার করতে পেরেছিল দেশবাসী কি এত শীঘ্রই তার প্রভাব হারাবে?

 তাঁর “আবার তোরা মানুষ হ’’ সমগ্র জাতিকে দেশাত্মবোধে অনুপ্রাণিত করে সন্তপ্ত কবির আদেশবাণীর মতই আজও বাংলার,—তথা ভারতের মেঘ-মেদুর গগনপ্রান্তে ধ্বনিত হচ্ছে। সে ‘শব্দময়’ আহ্বানকে চেষ্টা করে ঢেকে ফেলা যাবে না; এ ধ্বনি ঘুমন্তকে জাগিয়ে তোলে, মুমূর্ষুকে পাশ ফেরায়।

 অথচ ঐ একই লোক হাসির গানে মানুষের মনকে কি সহজ হাল্কা সুরেই না ভরিয়ে দিয়েছেন। মেয়েদের অত্যুচ্চ গুণের যেসব পরিচয় তাঁর “রেবা” ইত্যাদিতে দিয়েছেন, তিনিই আবার তাদের দুর্বলতাকে প্রচণ্ড কষাঘাত করতে ছাড়েন নি। বেশ তীব্র অনুযোগের সঙ্গেই “তোমরা ও আমরা”তে বলছেন;—

“বিপদে আপদে আমরাই পড়ে লড়ি,
তোমরা গহনাপত্র ও টাকাকড়ি
অমায়িকভাবে গুছায়ে পাল্কি চড়ি
দ্রুত চম্পট দাও।

তোমরা অবাধে যা খুসী বলিয়া যাও
ভয়ে আমরা স্তব্ধ রই,