নিরুপায় না হ’লে চোখ ফিরিয়েই রাখেন, তবে “কমরেডের” ও “মায়ের” দাবী একসঙ্গে শোধ করা যায় না; তাই বেত্রাঘাত না করেও ঈষৎ বক্রোক্তির কঠোরতর আঘাত কালে ভদ্রে কখন করে থাকেন, পাত্রবিশেষে সেটা কার্যকরীও হ’য়ে থাকে। এ দেশে আজও মেয়েদের গায়ে হাত তুলতে সৌজন্যে বাধে, বহু সহস্র বৎসরের কুসংস্কারের ফল কি না?[১] খুব সময়োচিত বলে তাঁর অজস্র ব্যঙ্গ-কবিতার মধ্য থেকে নারী সম্পর্ক শূন্য হলেও একছত্র মাত্র উদ্ধৃত করছি;—
“পশ্চিম আজি খুলিয়াছে দ্বার, লিজ লেণ্ডের চলে কারবার
দিবে আর নিবে, চেনাবে চিনিবে, যাবে না ফিরে।”
অপর একজন হাস্যরস সরস ঔপন্যাসিক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যয়েের “আই হ্যাজ”-এর ইরানী ও ইমানী বোন দু’টি নীরবালা নৃপবালাদের মতই কৌমারব্রতের সংহারিকা। সবচেয়ে মর্ম স্পর্শ করে পরিণত-যৌবনা রায়গৃহিণীর একান্ত অভাবনীয়ভাবে সম্মুখীন সপত্নী-বিভীষিকা। তাঁর রচনায় নারী চরিত্র একটু ঝাপ্সা, পুরুষচিত্রই জ্বল্জ্বলে।
অন্নদাশঙ্কর রায়ের বহু রচনায় স্বদেশিনী ও বিদেশিনী অনেক নারীর পরিচয় পাওয়া যায়; অত্যাধুনিক যাদের বলা হয় তাদেরও এবং বেশ একটু সেকেলে বলে যাদের পরিচয় আছে তাদেরও। মিষ্টি লেগেছিল “সত্যাসত্য”র উজ্জয়িনীকে, তার সমস্ত
- ↑ সম্প্রতি স্বাধীন ভারত ও স্বাধীন বাংলা এই ভীরু কুসংস্কারের হাত ছাড়িয়ে সুসংস্কৃত হয়ে উঠেছে, এখন মাতৃত্বহীনা মাতৃজাতির উপর হাত নয়, লাঠী ও গুলি অবাধেই চলছে। ভরসা এই, মহম্মদ ঘোরীরা এখন গরুর পাল সাম্নে নিয়ে যুঝ্তে এলে হিন্দুস্থান পিছন ফিরবে না।