পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪০৯

ইন্দির ঠাকুরাণীর চরিত্র থেকে আমরা শতাব্দীপূর্বের একটি বৃদ্ধাকে তার কতকগুলি স্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে দেখতে পাই; পরিণামটুকুও মর্মভেদী। চিরভাগ্যবিড়ম্বিতা সর্বজয়ার জন্য সহানুভূতিতে মন বেদনায় টনটন করে। “আরণ্যক’’ নূতনত্বে ভরপূর। “দৃষ্টিপ্রদীপে”র দৃষ্টিগুলিও অতি সুন্দর। এঁর সাহিত্যিক নারী সহজ বাস্তবতায় বাংলাসাহিত্যের গৌরবের বস্তু। “দেবযান” এবং তার “পুষ্প” মানুষকে দেবযানেই তুলে নেয়, তা’ যতটুকুর জন্যই হোক!

 তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহু উপন্যাসের বিভিন্ন নারীচরিত্রের দীর্ঘ আলোচনা বর্তমান ক্ষুদ্র প্রবন্ধে সম্ভব নয়। কিন্তু এ কথা আজ মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করতেই হবে যে, বাংলার তথাকথিত প্রগতি সাহিত্যের ধারা তারাশঙ্কর “বনফুল,” বিভূতি মুখোপাধ্যায়, বিভূতি বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ বসু প্রমুখ নবীন সাহিত্যিকের প্রবল বন্যার মুখে বাঁধ বেঁধে দিয়ে প্রায় বন্ধ করে এনেছেন। তারাশঙ্কর একজন সত্যকার শক্তিমান লেখক। ইতিমধ্যেই তিনি বঙ্গসাহিত্যকে অজস্র মূল্যবান অলঙ্কারে বিভূষিত করেছেন। “কালিন্দী” ও “ধাত্রীদেবতা’’র মা, জ্যোতির্ময়ী পিসিমা, শৈলজা, রায়গৃহিণী, হেমাঙ্গিনী, সুনীতি, উমা, “গণদেবতা”র সন্তান ক্ষুধাতুর কামার-বৌ পদ্ম, উচ্চ হৃদয়বতী চরিত্রহীনা চাঁড়ালের মেয়ে দুর্গা, মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতের পৌত্রবধু জয়া নারীমর্যাদায় ও বিশিষ্টতায় কে’ই বা তুচ্ছ! ‘রাইকমল” “প্রতিমা,” “অগ্রদানী,” “পিতাপুত্র,” ‘মন্বন্তর, “বিংশ শতাব্দী” প্রত্যেক বইখানিতেই বর্তমান বাংলা তার সমস্ত সুখদুঃখ, শান্তি অশান্তি অভাব অভিযোগ সমেত যেন প্রতিকার-