পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

প্রার্থী হয়ে বাঙ্গালীর সামনে মূর্তি পরিগ্রহ করে এসে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের ভুলভ্রান্তি তুচ্ছ ও ক্ষুদ্র হলেও তা’ থেকে কি না হ’তে পারে—উজ্জ্বল আলোকসম্পাতে তা সকলকার সামনেই সুস্পষ্টরূপে প্রকট হয়ে উঠেছে। আধুনিক বাংলার গলদ কোথায় এবং তা’ দুর করবার প্রচেষ্টা কি, ইনি সেইটী প্রাণস্পর্শী চিত্রে অঙ্কিত করে সকলকার সামনে ধরে পথপ্রদর্শকের কাজও করেছেন। নিছক রসসৃষ্টিতেই সব কর্তব্য সমাধা করেন নি।

 বিভূতি মুখোপাধ্যায়ের ছোট গল্পগুলি সুরুচিপূর্ণ বলে “নীতিপাঠ”[১] বা চাণক্যনীতি-জাতীয় এমন কথা কেউ বলবে না। সুখপাঠ্য হাস্যরসসিক্ত এবং সজীব। “ছোট্ট রাণুর’’ আদর-আব্দার আমাদের মনকে পরিষিক্ত করে রাখে। তাঁর উপন্যাস “নীলাঙ্গুরীয়” পড়ে আমরা সে তৃপ্তি পাইনি যা’ তাঁর গল্পগুলিতে পেয়ে এসেছি। “মীরা” অনাবশ্যকে “শেষের কবিতা’’র লাবণ্যর পথ গ্রহণ করলে এবং “নীলাঙ্গুরীয়” পাঠিয়ে দিয়ে দরিদ্র প্রেমিককে অপমানের উপর চরম অপমান করলে। ভাল বলতে পারি না এ পথকে।

 শক্তিমান লেখকদের একটি বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত। সুন্দর হলেও একই চরিত্রের পৌনঃপৌনিকতায় প্রথম সৃষ্টির মর্যাদা নষ্ট হয়ে যায়। নবনব চরিত্রসৃষ্টির গৌরব থেকেও লেখক বঞ্চিত হন। কলাবিদরা এ দিকে দৃষ্টি রাখলেই দৃষ্টিপ্রদীপের আলোয় নিজেরাই ত্রুটি বিচ্যুতিগুলি দেখতে পাবেন।


  1. যেমন ‘‘না-পড়া পণ্ডিতরা’’ মধ্যে মধ্যে কোন কোন বড় বড় সাহিত্যিকের উচ্চতম শ্রেষ্ঠ রচনা সম্বন্ধেও বঙ্গ টিপ্পনী করিতে দ্বিধা করেন না!