পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

পৌরাণিকা। নারীচিত্তের কল্যাণ নির্ঝর ঐ তিনটী ধারাতেই সমাজে সংসারে ঢেলে দিতে কার্পণ্য হয় নি। তাঁদের রচনায় বহু নারীচিত্র সুখদুঃখে শোকে সান্ত্বনায় যুঁই বেল, বকুল চম্পক চামেলীর মতই ফুটে উঠেছে। এঁদের মধ্যে মানকুমারীর রচনায় বাস্তব নারীর দেখা পাই।

 (রাণী) মৃণালিনীর কল্লোলিনী”,“নির্ঝরিণী” প্রভৃতিতে তাঁর আত্মগত কয়েকটী কবিতা তদানীন্তনকালে লোকপ্রিয় হয়েছিল।

 কিছুদিন বাংলাসাহিত্যে নারীরচিত তেমন কোন উল্লেখযোগ্য বই দেখা দেয়নি। তবে ছোট গল্প বা কবিতা লেখা বন্ধও ছিল না, তা’ অনায়াসে বলা চলে। আবার ১৯০২-০৩ খৃষ্টাব্দ থেকে যেন একটু হঠাৎ করেই তাঁদের সাহিত্যক্ষেত্রে আবির্ভাব ঘটলো। অবশ্য জগতে হঠাৎ কিছু সত্যকার ঘটে না, যা’ ঘটে তার আরম্ভ অনেক আগে থেকেই হয়, যবনিকার অন্তরালে গোপনসৃষ্টি লোকচক্ষের অজ্ঞাতে চল্‌তে থাকে, তারপর সহসা একদিন সর্বসমক্ষে প্রকট হয়ে পড়ে। অম্বুজাসুন্দরী দাশগুপ্তা, নির্ঝরিণী ঘোষ, আমোদিনী ঘোষ, নিস্তারিণী দেবী, তরুলতা দত্ত প্রভৃতি লেখিকাগণ লেখনী পরিচালনা করছিলেন, কিন্তু বিশেষ এমন কোন চরিত্রসৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। “ভারতী”—মাসিকপত্রকে বহন করে এই সময় কয়েকজন শক্তিশালিনী লেখিকা দেখা দিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রথমদিকে সকলেই ছোট গল্প লেখিকা ছিলেন; কেহ বা স্বনামে কেহ বা বেনামীতে ইতঃস্তত লেখা ছাপাতেন।

 ১৯০৯-১১ খৃষ্টাব্দের “ভারতী”তে ধারাবাহিকভাবে বাহির হ’বার পর ১৯১২ খৃষ্টাব্দে অনুরূপা দেবীর “পোষ্যপুত্র” উপন্যাস